আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্রোয়েশিয়ায় ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাতে শিশুসহ ৫জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবারের (২৯ ডিসেম্বর) এ ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় গণমাধ্যম।
কাছের শহর গিলিনার মেয়রের বরাত দিয়ে ক্রোয়েশিয়ান রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে যে সেখানে চারজন প্রাণ হারিয়েছে।
পেট্রিঞ্জার মেয়র জানান, প্রায় অর্ধেক শহর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ধ্বংসস্তুপ থেকে মানুষকে টেনে তোলা হচ্ছে।
তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, রাজধানী জাগ্রেবের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
ক্রোয়েশিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্প প্রতিবেশি সাইবেরিয়া এবং বসনিয়াতেও অনুভূত হয়েছে।
ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র জানায়, দেশটির রাজধানী জাগ্রেব থেকে ১৭ মাইল দূরের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকায় এ ভূমিকম্প আঘাত হানে।
ক্রোয়েশিয়াতে ১৪০ বছরের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছে এটি। এর পরিপেক্ষিতে সকল প্রসাসনিক কার্যক্রম অস্থায়ী ভাবে বন্ধ রেখেছে দেশটি।
তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়, ভূমিকম্পের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাড়ির ছাদ ধসে পড়েছে। অনেক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।
ক্রোয়েশিয়ার ভূতত্ত্ববিজ্ঞানী ক্রেশিমির কুক ভূমিকম্পকে অত্যন্ত শক্তিশালী বলে আখ্যা দিয়েছেন। বলেন, বসন্তে জাগ্রেবে এবং তার আশপাশে আঘাত হানা ভূমিকম্পের চেয়ে মঙ্গলবারের ভূমিকম্প অনেক শক্তিশালী।
নড়বড়ে, পুরানো ভবনের আশপাশ থেকে সরে যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের আহ্বান জানান তিনি। আক্রান্ত এলাকা থেকে অন্য কোথাও অবস্থান নেয়ারও অনুরোধ জানান। সতর্ক করেছেন পরবর্তী মৃদু ভূমিকম্পের বিষয়ে।
ভূমিকম্পের সঙ্গে সঙ্গে ভীত সন্ত্রস্ত বাসিন্দারা রাস্তায় ছুটে আসেন। করোনা সংক্রমণরোধে জারি করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও অনেকে শহর ছেড়েছেন ইতোমধ্যে।
আগের দিন সোমবার একই এলাকায় ৫ দশমিক ২ মাত্রার মাঝারি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ক্রোয়েশিয়া রেড ক্রস জানায়, তারা পেট্রিঞ্জায় ভূমিকম্পে আক্রান্তদের সহায়তায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়েছে।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ভূতত্ত্ববিজ্ঞানী স্টিফেন হিকস এক টুইট বার্তায় জানান, শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সতর্কতার অংশ হিসেবে স্লোভেনিয়ার ক্রস্কো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরমাণু কেন্দ্রের মুখপাত্র। সার্বিয়ান সিজমোলজিকাল ইনস্টিটিউটের ব্র্যাঙ্কো ড্র্যাগিসেভিচ বিবিসিকে বলেছেন: "আমরা আরও ভূমিকম্পের আশা করতে পারি।"