মুক্তমন রিপোর্ট : বাংলাদেশ সড়ক দুর্ঘটনায় ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই কোন ধরনের মামলা হয় না বলে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এছাড়া ২০ শতাংশ মামলায় সাজার হারও মাত্র ১ শতাংশ। এমনই তথ্য উঠে এসেছে সমিতির প্রকাশিত নতুন পরিসংখ্যানে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, বিগত বছরে দুর্ঘটনার শিকার যানবাহনের মধ্যে ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছিল বাস, ২৯ দশমিক ৮১ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান এবং ২১ দশমিক ৪ শতাংশ মোটরসাইকেল। পরিসংখ্যান বলছে, ৮০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কোনো মামলা হয় না। ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজা হয় মাত্র ১ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের নগদ ৫ লাখ টাকা এবং নিহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে ২০ লাখ দেয়ার দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা তহবিল, ট্রাস্টি বোর্ড এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বিধিমালা প্রণয়নেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি, আহতদের ক্ষতিপূরণ কমে তিন লাখ ও নিহতদের পাঁচ লাখ করার পাঁয়তারা চলছে। এ কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে আমরা আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবছর প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সেসব প্রতিবেদনের সমন্বয় করে সড়ক আইন কার্যকরের পরবর্তীতে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর হয়েছে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর। এরপর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত (১৫ মাস) সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ২১০ জন।
আর আইন হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৪৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। আর এতে আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৯১ জন।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২০ সালে সড়কে হতাহতের একটি পরিসংখ্যান দিয়েছিল যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সেখানে বলা হয়েছিল, গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় হাজার ৬৮৬ জন নিহত এবং আট হাজার ৬০০ জন আহত হন।
গত বছর সড়কে চার হাজার ৮৯১টি দুর্ঘটনা ঘটে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি আরও জানায়, ২০২০ সালে রেলপথে ৩২৩টি দুর্ঘটনায় মারা যান ৩১৮ জন, আহত হন ৭৯ জন। ১৮৩টি নৌ দুর্ঘটনায় মারা যান ৩১৩ জন, আহত হন ৩৪২ জন এবং নিখোঁজ হন ৩৭১ জন।