তার মাঝে ৭ কলেজের রয়েছে এক বিশাল আবাসন সংকট। অধিভুক্তির ৩ বছরের দারপ্রান্তে পৌঁছেও এ সংকট নিরসনে প্রশাসন কোন সঠিক পরিকল্পনা হাতে নিতে পারে নি। যেখানে সকল পাবলিক ভার্সিটির কথা না হয় বাদ-ই দিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানই আবাসিক। তাদের নেই কোন আবাসন সংকট, নেই কোন দিক দিয়ে ভার্সিটির চেয়ে সুযোগ সুবিধার কোন পার্থক্য।
৭কলেজে ২ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা আছে বলে আমার মনে হয় না। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই আসে গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এদের বড় অংশ থাকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী বাসা নিয়ে, অনেকের হয়তো বাসা ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে নিজেই কোন একটা চাকরিতে জড়িয়ে যায়। এছাড়া তো তাদের কোন পথ নেই, ঢাকা শহরে থেকে শিক্ষা চালিয়ে যেতে হলে প্রথমে তাদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এ দায়িত্ব তো প্রশাসন নেয় নি। যা অনান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রায় শতভাগ নিশ্চিত। থাকার ব্যবস্থা থাকলে হয়তো আর সবকিছু বাড়ি থেকে এনে চালিয়ে নিতে পারতো। কিন্তু সে সুযোগ টা এখনে পাচ্ছে না আর এর প্রভাব সম্পূর্ণ পড়ছে রেজাল্টের উপর, শিক্ষার উপর।
একজন শিক্ষার্থী যখন সকল সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হয়ে নিজস্ব একটি সংকটের মাঝে পড়াশোনা করবে তখন তার রেজাল্ট খারাপ হবে এটাই স্বাভাবিক। টিকে থাকার সংগ্রামই যখন মূখ্য, সেখানে পড়াশোনা করে ভালো রেজাল্ট করার সুযোগ কোথায়?
তার মধ্যে সেশন জট, পরীক্ষার ফল প্রকাশে দীর্ঘ অপেক্ষা এসব তো রয়েছেই।
শুধু একদিকে নয় সকল দিক দিয়েই এসব বৈষম্য রয়েছে। এখানে নেই কোন পাবলিক ভার্সিটির মতো শিক্ষার সুযোগ সুবিধা, বিশাল শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অতি নগন্য, নেই তেমন কোন গ্রন্থাগার, নেই ক্লাসের কোন ঠিক ঠিকানা। সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে না পরলে শিক্ষার মান কিভাবে উন্নয়ন করবে। শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য কোন পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়নি। তাহলে এখান থেকে তারা কিভাবে ভালো রেজাল্ট আশা করে? শিক্ষা কার্যক্রমে তোমার ঢাবির মতো কোন সুযোগ সুবিধা দিবে না। আবার রেজাল্ট আশা করবে বিশ্বমানের,, বাহ্ চমৎকার!
৭ কলেজের প্রতিটা ক্ষেত্রে ভার্সিটির মতো সুযোগ সুবিধা দেন, তাদের মতো করে সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। দেখেন দেশের অনান্য ৮/১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে শিক্ষায় এগিয়ে যায় কি না।
গাছ লাগাবেন আম গাছ আর খেতে চাইবেন কাঁঠাল,,,হাস্যকর!
তার মধ্যে আবার ঢাবি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আন্দোলন অধিভুক্ত বাতিল চাই। তাদের দাবির বাস্তবায়ন ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সার্টিফিকেটে অ্যাফিলিয়েট যুক্ত করণ তাও আবার ভিন্ন মার্কে। যেখানে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছেই সেখানে ভিন্ন ভাবে Affiliated যুক্ত করা কতটুকু যৌক্তিক? ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধিভুক্ত কলেজের সার্টিফিকেটে কি Affiliated যুক্ত থাকে? অধিভুক্ত অনান্য প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেটে কি Affiliated যুক্ত থাকে?
এখানেই শেষ নয় Affiliated যুক্ত করার মাধ্যমে তাদের আন্দোলনের পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে এর পর হবে অধিভুক্ত বাতিলের আন্দোলন। বাহ্ এভাবে তারা একের পর এক আন্দোলন চালিয়ে যাবে আর আমরা বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়াশোনা করে ৮ বছরে অনার্স শেষ করবো এটাতো হয় না। অধিভুক্ত বাতিলের দাবি মেনে নিলে তারা বলবে ৭ কলেজ কে ঢাকা থেকে স্থানান্তর করা হোক। আর প্রশাসন এটাই মেনে নিবে এভাবে তো চলতে পারে না। তাদের আন্দোলন সংগ্রামের মাঝে আমরা থাকতে চাই না। আমরা এর সঠিক ব্যবস্থাপনা চাই। সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাই। আমরাও তাদের মতো অধিভুক্ত বাতিল চাই। আমরা আর ঝুলন্ত অবস্থায় থাকতে চাই না। ঢাবি কে বলবো আপনাদের দোলনায় আপনারাই দোলেন,, আমাদেকে নামিয়ে দেন। আমরা স্থায়িত্ব চাই। আপনাদের এইসব ইদুর বিড়াল খেলায় আমরা নেই।
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার এ অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করলে আমরা তা কখনোই মেনে নিবো না। যদি অধিভুক্ত করে রাখতেই হয় তাহলে আলাদা কমিশন গঠন করে সকল কার্যক্রম পাবলিক ভার্সিটির মতো করে পরিচালনা করতে হবে। তাদের মতো সকল সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।
আমরা শরণার্থী হিসেবে এদেশে অবস্থান করছি না। আমরা কেন সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগবো। ভার্সিটির যেমন সুযোগ সুবিধা দেন আমাদেরকেও তেমন সুযোগ সুবিধা দিতে হবে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সকালের সমান অধিকার থাকতে হবে এটা আমাদের মৌলিক অধিকার। পাকিস্তান আমলের মতো করে বৈষম্য এদেশে আর সম্ভব নয়।