আরিফ হোসাইন রাজন : আজকে কয়েকটি নিউজ পোর্টালে দেখলাম তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভবন ও নান্দনিক পার্ক করে দিবে রাজউক। কথাটা কতটা সত্য ও বাস্তবে সম্ভাবনাময় তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
বুধবার কলেজ প্রশাসনকে না জানিয়ে রাজউক তাদের আঞ্চলিক অফিসের পাশে তিতুমীর কলেজ ছাত্রাবাসের সামনের দেয়ালটি ভেঙে ফেলে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সে বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ প্রশাসনের সাথে কথা বলতে এসে রাজউক এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল লতিফ হেলালি একটি নতুন ভবন ও নান্দনিক পার্কের করে দিবে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রিপন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়ল।
রাজউক এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল লতিফ হেলালি জানান, "সারা ঢাকাজুড়ে আমরা ৫ হাজার ভবনকে এসএসডি করে ঝুঁকিপূর্ণ কি না পরিক্ষা করছি। তারই আওতায় আমরা তিতুমীর কলেজকেও রেখেছি। সরকারি তিতুমীর কলেজের বিজ্ঞান ভবণটি বেশ পুরোনো। আমরা এসএসডি করে দেখবো ভবণটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। যদি পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাহলে ওয়ার্ড ব্যাংকের আওতায় আমরা অনেক কাজ করে থাকি। সেখানে ওয়ার্ড ব্যাংকের প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা এই ভবনটিকে আরও বড় করে মাল্টিস্টোরি বিল্ডিং করে দেওয়া হবে। আর যদি কম ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাহলে অত্যান্ত নিখুঁদ ভাবে ভবণটি রিপারিং করে দেওয়া হবে। গত তিন বছর আগ থেকে আমরা ঢাকার ৫ হাজার ভবন এসএসসি করার কাজ শুরু করেছি। এটি আমাদের প্রকল্পের আওতায় আছে।"
এইবার আসি মূল কথায়, যেখানে রাজউক ৩বছর আগে থেকে কাজ শুরু করেছে ও তিতুমীর কলেজ এর আওতাভুক্ত , তাহলে রাজউক সংলগ্ন ক্যাম্পাস ও স্বত্বেও কেন তারা তিতুমীর কলেজকে এখনো এসএসডি করে নাই। কবে করবে তারও কোনো নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে নাই।
এছাড়াও নান্দনিক পার্ক সম্পর্কে রাজউক এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল লতিফ হেলালি বলেন,"প্রায় ৮০১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমে তিতুমীর কলেজের পাশে রাজউকের মহাখালী কম্পাউন্ডের পূর্বাংশে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজউক চেয়ারম্যানকে তিতুমীর কলেজের পাশে না করে অন্য কোনো জায়গায় ভবনটি নির্মাণ করার নির্দেশ দেন। বর্তমানে সে জায়গাটি খালি রয়েছে। সেটাকে রাজউক একটি সুদর্শন মাঠে রুপান্তরিত করে নান্দনিক পার্ক গড়ে তুলবে।"
কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো এই পার্ক কি তিতুমীর কলেজ এর জন্য ? নাকি মহাখালী এলাকার সাধারন মানুষের জন্য ও এর উত্তরাধিকারী কি সরকার ও রাজউক থাকবে ?
কারণ, পার্ক হলে সেখানে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিবে এইটা স্বাভাবিক , কিন্তু আড্ডা দিলেই সেইটা তিতুমীর কলেজের সম্পদ হয়ে যাবে না। মানে রাজউকের অবহেলিত এই জায়গা টা পাওয়ার জন্য আমাদের কলেজ প্রশাসন ও তিতুমীর কলেজের ছাত্রলীগ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কারণ ৫২হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য তিতুমীর কলেজ প্রাঙ্গণ টা অনেক ছোট। কিন্তু এখানে রাজউক পার্ক করলে আমাদের এই জায়গা টা পাওয়ার সম্ভাবনা একে বারেই নাই ,বললেই চলে।
আমার মতে দেওয়াল ভাঙ্গার অভিযোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে রাজউক প্রশাসন এই মিথ্যাচার ও কু-কৌশল পন্থা অবলম্বন করেন।
লেখক : শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ।