তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সুনামগঞ্জ : তোমরা আমার তালহারে আনি দেও, ও বাবারা আমার তালহারে মারলে খেনে । কি অপরাধ করছিল আমার পুতে। আমার সব আশা খাইরা নিল রে-। এ ভাবে কাউকে দেখে বিলাপ করে কাঁদছেন আর বার বার অচেনত হচ্ছেন, নেশাগ্রস্তের হাতে নির্মম ভাবে খুন হওয়া নিষ্পাপ শিশু তালার মাসুমি বেগম’। এমন করুন দৃশ্য দেখে চোখে পানি আটকানো যায় না।
এনামুল হক মুসা ওরফে তালহার বয়স মাত্র চার বছর। বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সে দ্বিতীয়। সবচেয়ে বেশি আদরেরও। সকাল-বিকেল সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখত তালহা। নেশাগ্রস্ত এক যুবক নিষ্পাপ শিশুটিকে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে খুন করেছেন। তার মৃত্যুতে পুরো বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। পরিবারের সদস্যরা সবাই শোকে ভেঙ্গে পড়েছেন। অকালে বুকের ধন হারিয়ে বাকরোদ্ধ তার বাবা-মা। জেলা শহর থেকে পুরো এলাকায় এখবর সামাজিক জোগ যোগে ছড়িয়ে পড়লে শোকাহত হয়ে পড়েন সবাই। সুুনামগঞ্জ পৌর শহরের গুজাউড়া হাছননগরে বাসিন্দা নুরুল হকের দ্বিতীয় ছেলে এনামুল হক মুসা ওরফে তালহাকে একজন বিচারক বানাতে চেয়েছিলেন তার বাবা-মা। এখন সেটা শুধু স্বপ্ন থেকে গেল।
নিহত তালহার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তালহার মা সুমি বেগম ছেলের মৃত্যুরতে পর পর জ্ঞান হারাচ্ছেন। পাশে বসা নিহত শিশুর চাচি হুহু করে কেঁদেই চলেছেন। পুরো এলাকার লোকজন অশ্রæ সিক্ত হয়েছেন। এদিকে অভিযুক্ত নেশাগ্রস্ত আব্দুল হালিমের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্ধারা। তারা জানান, বাবা-মায়ের আদরের সন্তান ছিল তালহা। এলাকার লোকজনও তাকে খুব ভালোবাসত আদর করতো। শিশু তালহা হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘এই নির্মম হত্যা আমরা মানতে পারছি না, নিষ্পাপ ছেলেটা তালহা আজ আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। তালহাকে যে খুন করেছে ওর যদি দ্রæত শাস্তি না দেয়া হয় তাহলে আমরা এলাকাবাসী কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দিব।’
স্থানীয়রা আরো বলেন, ‘আজকে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা সত্যিই খুব মর্মান্তিক মানতে পারছিনা। কাল যে আরেকটা হবেনা এটার নিশ্চয়তা কি। একজন নেশাগ্রস্ত লোক চার বছরের শিশুটিকে খেলা অবস্থায় খুন করল। আমরা চাই, ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো নেশাগ্রস্ত লোক এমন নির্মম ঘটনা না ঘটাতে পারে। সেজন্য প্রশাসনের কঠোর হতে হবে। না হয় তালহার মতো অকালে কত ফুল ঝড়ে যাবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত শিশু তালহার বাবা বলেন, ‘বাসার সামনে খেরছে আমার ছেলে, কেন আমার বুকের ধন কে খুন করা হলো। কী দোষ ছিল আমার অবুঝ ছেলের ? এর পেছনে নিশ্চয় কেউ জড়িত আছে কি-না এমন প্রশ্ন করেন তিনি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাই, আমার ছেলেকে আমি বিচারক বানাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটা আর হলো না। আমার অবুঝ ছেলেকে মনে হয় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই।’
এ ঘটনায় সুনামগঞ্জ সদও মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘাতক কে পুলিশ আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ াাদাল খুনিকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. শহীদুর রহমানের সরকারী মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বন্ধ থাকার কোন বক্তব্য জানা যায়নি।