বগুড়া অফিস : বগুড়ায় আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে শিমুল মিয়া (২৭) নামের এক যুবককে অপহরণের পর হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। সোমবার রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলপুকুরিয়া বাজার থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। সে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউনিয়নের মোন্নাপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের পুত্র। এ ঘটনায় সোমবার রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউপি সদস্য ও নিহতের ভাই রায়হান মিয়া বাদী হয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মহিদুল ইসলামসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সোমবার শিমুল মিয়া ধর্ষণ মামলায় বগুড়ার আদালতে হাজিরা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বগুড়া সদরের টেংরা বন্দরে সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামলে চেয়ারম্যান মহিদুলের ব্যবহৃত কালো রঙের মাইক্রোবাসে তাকে টেনে হেঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তারা শিমুলের মৃত্য নিশ্চিত ভেবে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলীপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তাবন্দী লাশ ফেলে রেখে যায়। কিন্তু তখনো সে বেঁচে ছিল। পথচারীরা রাস্তার পাশে বস্তাবন্দী শিমুলের বাঁচার আকুতি ও গোংঙানি শব্দ শুনে তাকে উদ্ধার করে ফুলপুকুরিয়া বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ সোমবার রাতেই ফুলপুকুরিয়া বাজার থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার লাশ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এঘটনায় নিহতের বড়ভাই ইউপি সদস্য রায়হান ইসলাম বাদী হয়ে ১৩জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে ৭নং বিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মহিদুল ইসলামকে। আসামীরাা সবাই বিহার ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই ইউপি সদস্য রায়হান ইসলাম বলেন, “বিহার ইউপি নির্বাচনের পর থেকে চেয়ারম্যান মহিদুল আমার ভাইকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে ব্যবহার করত। আমার ভাই সেগুলোর প্রতিবাদ করে চেয়ারম্যানের কাজ থেকে সরে যায়। এ কারণে চেয়ারম্যানের সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তারপরেও তাকে দলে ফেরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার বিরুদ্ধে ৯-১০টা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। সর্বশেষ তাকে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করে। আমি প্রশাসনের কাছে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।”
গোবিন্দগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন বলেন, শিমুলকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়। তার একটি পা কোপানো ও ভাঙা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।