সোহরাব হোসেন, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্য-চারিগ্রাম এলাকার আব্দুল্লাহ (২০) নামের কলেজ পড়–য়া এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। সে ওই গ্রামের প্রবাসী আব্দুস সবুরের পুত্র ও সিংগাইর ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
নিহতের পরিবারের দাবী, কীটনাশক খেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তার মৃত্যু রহস্যজনক। এ নিয়ে এলাকায় চলছে কানাঘুষা ।
নিহতের খালাতো ভাই প্রতিবেশী মাসুদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমাদের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলে আব্দুল্লাহ বাড়িতে যায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানতে পারি সে বিষ পান করেছে। পরে তার ভগ্নিপতি সেলিমকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার ওয়াশ করার পর ঢাকায় রেফার্ড করেন। পরে তাকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রথমে আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকালে আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ইদুর মারার ওষুধ খেয়ে মৃত্যুর কথা জানতে পারলেও এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তার জানা নেই।
আশপাশের একাধিক লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শান্তশিষ্ট,নম্র-ভদ্র স্বভাবের আব্দুল্লাহ কখনো কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলো না। বিনা কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে না । তারা বলেন, আব্দুল্লাহ তার বাবার একমাত্র পুত্র সন্তান হওয়ার কারণে অর্থ সম্পদ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে এ মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জোর দাবী জানিয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশকে না জানিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহতের একমাত্র ভগ্নিপতি সেলিম বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমার শ্যাালকের শুভ নামের জনৈক বন্ধু বিদেশ থেকে ফোন করে আব্দুল্লাহর খোঁজ নিতে বলেন। এ সময় আমি ওর কক্ষে গিয়ে বমি করতে দেখতে পাই। পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার দাবী কীটনাশক খেয়ে আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারন নেই বলে তিনি দাবী করেন।
এদিকে, একমাত্র পুত্রের মৃত্যু শোকে আব্দুল্লাহর মা জ্ঞান হারা বিধায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাঃ মোঃ হানিফুল হক বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসলে ওয়াশ করে পেটে কিছু পাওয়া যায়নি। রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল বিধায় ঢাকায় রেফার্ড করেছি।
চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাজেদুল আলম তালুকদার স্বাধীন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে কেউ জানায়নি। আমি লোক মুখে শুনেছি মৃত্যুটি অস্বাভাবিক।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রকিবুজ্জামান বলেন, আমাকে এ বিষয়ে কেউ অবগত করেনি।