এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই : মিরসরাই উপজেলায় দুটি সেতু বদলে দিতে পারে এলাকায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষের ভাগ্য। বদলে যাবে ওইসব এলাকার অর্থনীতির চিত্র।
সেতু দুটি হচ্ছে উপজেলার মায়ানী ও সাহেরখালী ইউনিয়ন ঘেঁসে যাওয়া খালের উপর,অন্যটি ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামে বামনসুন্দর খালে। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। সাঁকো থেকে পড়ে অনেকে আহত হয়েছেন।
স্বাধীনতার ৫০বছরেও একটি সেতুর মুখ দেখলো না দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অবহেলিত এই এলাকার মানুষ।
এলাকাবাসী জানান, সরকার আসে সরকার যায় কিন্ত প্রতিশ্রুতি রয়ে যায় কেবল মুখে মুখেই ।জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের আগে সেতু করার ওয়াদা দিলেও নির্বাচনী বৈতরনী পার হয়ে গেলে আর খবর থাকেনা। তৎকালীন বিএনপি সরকার আমলে কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখতে পারেননি স্থানীয় সাবেক সাংসদ।
জানা গেছে, সেতুর অভাবে মানুষের দূভোগের্র শেষ নেই। বিশেষ করে বর্ষাকালে গ্রামের মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে হয়। এছাড়া ছোট ছেলে মেয়েরা ভয়ে সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে চান না।যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়া ইলিস মৌসুমে সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে সময় লাগায় স্থানীয় জেলেদের মাছ বাজারে পৌঁছানোর আগেই পঁচে যায় । বিকল্প পথেও কাঁদা মাটি মাড়িয়ে পৌঁছাতে সময় লাগে। তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ন বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। এতে কৃষিপণ্য বহন, অসুস্থ রোগী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। বর্ষা আসলে এই দুর্ভোগ হয় দ্বিগুন।

পশুরাম জলদাস বলেন, সাহেরখালী কাচতালুক জলদাসপাড়া, মায়ানী জয়নগর জলদাসপাড়া, মায়ানী মির্জানগর জলদাসপাড়ার মানুষের একমাত্র যোগাযোগের সড়ক এটি। এই সাঁকোর উপর যদি একটি ব্রিজ নির্মাণ হয় তাহলে আমাদের কষ্ট লাগব হবে।
বাহার মিয়া বলেন, ভোট এলে কেবল জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেয়। পরে আর খোঁজ থাকে না। তাই স্বেচ্ছাশ্রম ও নিজস্ব অর্থায়ণে নির্মিত সাঁকোই এখন ভরসা। তবে ভরা বর্ষায় সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তখন তাদের ঝুঁকি নিয়েই পার হতে হয়। তারা অবিলম্বে সাঁকোর স্থলে সেতু নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এদিকে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও একটি সেতু পেলেন না মিরসরাইয়ের পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামের হাজার মানুষ। একটি সেতুর অভাবে মৎস্য চাষ, পশুপালন ও কৃষি কাজ চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সেতুর অভাবে মানুষের দূভোগের্র শেষ নেই। বিশেষ করে বর্ষাকালে গ্রামের মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে হয়।
এবিষয়ে মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহম্মদ নিজামী বলেন, সাহেরখালী খালের উপর দুই বছর আগে ব্রিজ নির্মাণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে টেন্ডার পক্রিয়া গিয়েছিলে। পরবর্তিতে আর্থিক সঙ্কট দেখিয়ে এই ব্রিজের বরাদ্দ এবং অনুমোদন বাতিল করা হয়। ইতোমধ্যে পুনরায় প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করছি চলতি অর্থ বছরে অনুমোদন হয়ে টেন্ডার পক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে।
মিঠানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামের বামনসুন্দর খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মান প্রয়োজন। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।