বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদদাতা : পাওনা দুই হাজার টাকার জন্য নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের সুলতান ওরফে ইমনকে (৪০) গলা টিপে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন তাঁরই বন্ধু ছানোয়ার হোসেন ওরফে ছানা।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর ছানোয়ার শনিবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। সুলতান হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গত ১৩ জানুয়ারি জেলার লালপুরের চষুডাঙ্গা মাঠের গমক্ষেতের মধ্যে বাগাতিপাড়া উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে সুলতানের লাশ পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধারের সময় সুলতানের পকেট থেকে পাওয়া একটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করেন পুলিশ।
এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার পর খুনিকে ধরতে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম গঠন করা হয়। এরপর পুলিশ সুলতানের খুনিকে সনাক্তসহ গ্রেফতারে মাঠে নামে। তদন্তের সময় পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে হত্যাকারীকে শনাক্ত করে।
শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি নিহত ব্যক্তির বন্ধু একই উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে ছানোয়ার হোসেন (৪২)। তিনি দ্রুত নিজের অবস্থান পরিবর্তন করায় তাঁকে ধরতে পুলিশ ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, পঞ্চগড়, সৈয়দপুর, রংপুর ও জামালপুরে অভিযান পরিচালনা করেন। অবশেষে শুক্রবার তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তিনি প্রথমে পুলিশের কাছে, পরে আদালতে সুলতানকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
গ্রেফতারকৃত ছানোয়ার হোসেনের পুলিশের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো জানান, সুলতান তার বন্ধু ছানোয়ার হোসেনের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা পরিশোধ না করায় ছানোয়ার ক্ষুব্ধ হন এবং সুলতানকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।
গত ১২ জানুয়ারী মোবাইল ফোনে সুলতানকে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাজারে ডেকে নেন। সেখানে পাওনা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় পরে সুলতানকে ডেকে নিয়ে তিনি লালপুর উপজেলার চষুডাঙ্গা এলাকায় যান এবং তর্কাতর্কির একপর্যায়ে গলা টিপে সুলতানকে হত্যা করে মৃতদেহ সেখানেই ফেলে পালিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাবেদ যুবায়ের, লালপুর-বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম, সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জামিল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।