আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ): গাছের শাখা-প্রশাখায় শোভা পাচ্ছে আমের সোনালী মুকুল। বসন্তের দক্ষিনা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে ডালে। যেন প্রকৃতি সেজেছে আমের মুকুলের নোলকে।
মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে গাছে মৌমাছির ভিড়। বছর ঘুরে গাছে আমের মুকুল ঋতু বৈচিত্র জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। অধিকাংশ গাছেই আমের মুকুল, কিছু গাছে আগাম গুটিও দেখা দিয়েছে। আবহাওয়াগত কারনে মানিকগঞ্জের আমের খ্যাতি রয়েছে। বাণিজ্যিকভিত্তিক মানিকগঞ্জে চাষিদেরও মাঝেও আম উৎপাদনের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে ।
সরেজমিন জেলার বৃহত্তর বাণিজ্যিকভিত্তিক আম বাগান গিলন্ড মুন্নু সিটিতে গিয়ে দেখা গেছে, বাগানগুলোতে মুকুলের ভারে নুইয়ে পরছে গাছের শাখা প্রশাখা। পাতাগুলো ঢেকে শোভা পাচ্ছে সোনালী মুকুলের দৃশ্য। অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা আগাম মুকুল দেখা গেছে এবার। গাছে মুকুল আসার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকেই পরিচর্যা করতে শুরু করছেন আম চাষিয়া।
রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে মুকুল রক্ষায় চাষিরা কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন। বাম্পার ফলনের আশায় স্প্রে পদ্ধতিতে প্রয়োগ করছেন বিভিন্ন বালাইনাশক। চলতি মৌসুমে গত বারের চেয়ে এবার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মানিকগঞ্জের গ্রাম ও শহরের প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি আমগাছ রয়েছে। অনেকের বাড়ির ছাদেও উন্নত জাতের আম গাছের চারা লাগিয়ে পরিচর্যা করে প্রতি মৌসুমেই আম পাচ্ছেন। আবার অনেকে বারো মাসি আমগাছও লাগিয়েছেন।
ঘিওরের রাধাকান্তপুরের কৃষক মোঃ মুন্নাফ মিয়া বলেন, আ¤্রপালী, বারি ৪, হাড়িভাঙা জাতের আম চাষ করা হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার গাছে অনেকটা আগাম মুকুল এসেছে। তাই আগে থেকে গাছের পরিচর্যা করতে শুরু করছেন তিনি। তবে কয়েক দিন ঘন কুয়াশার কারণে মুকুলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বালাই নাশক স্প্রে করে ভাল ফলাফল আশা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। মাঠ কর্মীরা আমচাষিদের নিয়মিত পরামর্শসহ সকল ধরণের সহযোগিতা করছেন।
ঘিওরের বানিয়াজুরী এলাকার রিফাত নার্সারীর মালিক আব্দুর রশিদ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি প্রায় ৪ হাজার আমের চারা বিক্রি করেছেন। অন্যান্য ফলজ গাছের তুলনায় আমের চারার চাহিদা বেশি।
দিনদিন মানিকগঞ্জে বাণিজ্যিকভিত্তিক চাষিদের মাঝে আম উৎপাদনের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে । খরচের তুলনায় অধিক লাভ এবং পরিবার পরিজন নিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি আম বাগানের রয়েছে নিজস্ব একটা সৌন্দর্য্য।