গজারিয়া প্রতিনিধি : মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে থানা পুলিশ হেফাজতে তিনজন আটক থাকার খবর পাওয়া গেছে ।
উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন চর চাষী গ্রামে দিনমজুর আবদুর রাজ্জাকের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় এই ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী সাদিয়া গুয়াগাছিয়া পাচগাও উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ধর্ষিতা সাদিয়ার মা- পারুল বেগম জানান বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় বড় মেয়ের জামাই জনি আমার মেয়ে সাদিয়া ও আমি ঘরে কথোপকথনের সময় প্রকৃতির ডাকে সাদিয়া ঘর থেকে বের হয় ।
এই সময়,উত পেতে থাকা এলাকার সন্ত্রাসী চক্রের দুইজন চর চাষী গ্রামের পারবেজের ছেলে সালাউদ্দিন, লিটন মিয়ার ছেলে আকাশ আমার মেয়ে সাদিয়াকে মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ভাবে বাড়ি থেকে অনেকদূর পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে ।
• পারুল আক্তার আরো জানান খোঁজাখুঁজির এক ঘন্টা পর সাদিয়া নোংরা পোশাকে বাড়িতে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে । জ্ঞান ফেরার পর সাদিয়া আমাদেরকে জানান ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে সালাউদ্দিন ও আকাশ দুইজন মিলে মুখ বেঁধে ফেলে , এবং বাড়ি থেকে অনেক দূরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ভাবে তাকে ধর্ষণ করেছে এবং ভিডিও ধারণ করেছে ।
ঘটনাটি প্রকাশ করলে তার ছোটবোন কেওএকই ঘটনার শিকার হতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে । ঘটনাটি জিজ্ঞাসাবাদ করায় সালাউদ্দিন ও আকাশ গ্রুপের ১০থেকে ১২ জন বাড়ির পাশে তোতামিয়ার বিয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতার সামনে বড় মেয়ের জামাই জনি মেয়ে রোজিনা ও পারুল আক্তার সহ চারজনকে তারা মারপিট করেছে ।
তোতা মিয়ার বাড়ির পাশে হুমায়ুন কবির ও রবিউল সহ একাধিক লোক জানান বিয়ের বাড়ির কনসার্ট অনুষ্ঠান চলাকালে সালাউদ্দিন ও আকাশ গ্রুপ এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে ।তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ভয়ে এলাকার সাধারণ ও নিরীহ মানুষ অতিষ্ঠ। প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে এই চক্রটি ।
• সাদিয়ার বড় বোন জামাই আহত জনি জানান রাত আটটার সময় আমাদের ঘরে একে অপরের সাথে ফোনালাপ চলাকালে সাদিয়া প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হয় । সাদিয়া ঘরে ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় আমরা আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করি ।
অনেকক্ষণ পরে সাদিয়া মাথায় চুল এলোমেলো ও নোংরা পোশাক পরিধানে আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে । জ্ঞান ফেরার পর সাদিয়া এই ঘটনা জানায় , প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পাশের বাড়ির তোতা মিয়ার বিয়ের অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত গ্রুপ অবস্থান করায় আমরা জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে গেলে সালাউদ্দিন আকাশ সহ ১০থেকে ১৫জন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় ।
আমাদেরকে মারপিট করে আহত করে এলাকাবাসী আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করে । তখন ঘটনাটি ট্রিপল নাইন নম্বরে ফোন দিয়ে অবগত করার পর থানা পুলিশ আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে । এই বিষয়ে অভিযুক্তদের চাচা স্বপন আকাশের মা ও আল-আমিন নামে থানা হেফাজতে রয়েছে ।
ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মোহাম্মদ আলী খোকন জানান বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ধর্ষিতা সাদিয়ার মা পারুল আক্তার কে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । পারুল আক্তার বেগম জানান আমার মেয়েকে জোর পূর্বক ভাবে দর্শন করা হয়েছে ।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান পারুল আক্তার বেগমকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন প্রকৃত ধর্ষণের ঘটনা হলে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের সহযোগিতা থাকবে ।সাজানো ঘটনা হলে সর্বোচ্চ নীতি-আদর্শের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন ।
গজারিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রইছ উদ্দিন জানান ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে ।প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে । ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দ্রুত অগ্রগতির প্রত্যাশায় মুন্সিগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন মাহফুজ মহোদয় থানা পরিদর্শনে এসেছেন ।