শিরোনাম
শেখ মোহাম্মদ আলী, সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি : শরণখোলায় আমনধান ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। উপজেলার গ্রামাঞ্চলে পোকার আক্রমণে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ জমির ধান ক্ষেতে লাল হয়ে ধংস হচ্ছে। ব্যাপক ফসলহানির আশংঙ্কায় চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরজমিনে গেলে উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের চাষী আকব্বর খান (৬০) জানান, তার ৪০ বিঘা জমি এখন পোকার দখলে। দক্ষিণ রাজাপুরের চাষী নজরুল গাজী (৪০) বলেন তার ২০ বিঘা ও উত্তর তাফালবাড়ী গ্রামের বাদল সরদার (৪৫) জানান, তার ৫ বিঘা জমির একই অবস্থা। উপজেলার দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের চাষী মিলন আকন (৪০), মানিক আকন (৩৮), রফিকুল আকন (৪৫) বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে চাষের কাজে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ হলেও এবার তারা কোন ফসল ঘরে নিতে পারবে বলে মনে হয়না। গত কয়েকদিনে পোকার আক্রমনে ফসলের মাঠ বিবর্ণ হয়ে গেছে। দেখলে মনে হয় কেউ ফসলের মাঠে আগুন দিয়ে গাছগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। কীটনাশক দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় চারটি ইউনিয়নে এবার ৫ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ও ৪হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন ধান চাষ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক অতি বর্ষনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও পানি নেমে যাওয়ার পরই প্রায় সর্বত্রই কারেন্ট নামের এক বিশেষ পোকার প্রকোপ দেখা দেয়। পোকাটি প্রতিটি ধান গাছে আক্রমন করার ২/৩ দিনের মধ্যেই গাছ বিবর্ণ হয়ে পড়ে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার প্রায় সর্বত্র এ অবস্থা দেখা দেয়ায় চাষীরা ফসলহানির আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পলাশ কান্তি রায় বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান ক্ষেতে এই পোকাটির আক্রমন হয়ে থাকে। খুব দ্রুত ধানক্ষেত ধ্বংস করে দেয় বলে পোকাটির নাম দেয়া হয়েছে কারেন্ট পোকা। তবে তিনি এই পোকা দমনে প্লেনাম, একতারা ও পায়রাজিন নামের কীটনাশক ব্যবহারের জন্য চাষীদের পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়াসিম উদ্দিন বলেন, কারেন্ট পোকা দমনের জন্য চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, কারেন্ট পোকা নিয়ন্ত্রনের জন্য কৃষি বিভাগকে সার্বক্ষনিক মাঠে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।