সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা : নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে কারচুপির কোন সুযোগ নাই। এজন্য ভোটারদেরকে এর উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। গতকাল বুধবার সাভার পৌরসভা সাধারন নির্বাচন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা সভায় নির্বাচন কেমন হবে এবং করনীয় সম্পর্কে আলোচনা করে জেনেছি নির্বাচনের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো আছে। কোথাও কোন সংঘর্ষের আশঙ্কা নাই। এখানে প্রার্থীদের মধ্যে সহযোগীতা আছে। তাদের আচরনে এবং ব্যবহারে নির্বাচন পরিচালনাকারীরাও সন্তোষ্ট। এছাড়া ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচনকে সুষ্ঠ করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে বলে আশ^স্থ করে বলেন আগামী ১৬ জানুয়ারী সাভারসহ সারাদেশের ৬১ টি পৌরসভার নির্বাচন নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইতিমধ্যে ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রতি ভোটারদের আগ্রহ বেড়েছে। গত ৩০ তারিখের নির্বাচনে ৮৫ ভাগ ভোটার উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করেছে যার কৃতিত্ব ভোটারদের। ইভিএম পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত যেসব পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে আমলে নেয়ার মতো কোন অভিযোগ নাই। নির্বাচনের সময় বহিরাগতদের চলাচলে নিষেধাজ্ঞাসহ অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা নির্বাচনের কালচার পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছি এবং তা বাস্তবায়নের জন্য ইভিএমকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইভিএম যদি কেউ তুলে নিয়ে যায় সেখানে একটি ভোটও দিতে পারবেনা। কারন এখানে ফলস ভোট দেয়ার কোন সুযোগ নাই। যার ভোট একমাত্র তিনিই দিতে পারবেন। তাই ইভিএম কেউ নিয়ে গেলেও কোন কাজ হবেনা কিংবা এর উপর শক্তি প্রয়োগ করেও কিছু করা যাবেনা। এই বিষয়টি যখন ভোটারদের মাথায় ঢুকে যাবে তখন আর কোন বহিরাগতরা ভোট কেন্দ্রে আসবেনা এবং কোন সমস্যাও হবেনা।
তিনি আরো বলেন- নির্বাচনে হেরে গিয়ে আমেরিকাতেও কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়েছে। নির্বাচনে হেরে গেলে বলা হয়, কারচুপি হয়েছে। এটা এদেশের কালচার। আওয়ামী লীগ হেরে গেলেও তারা কারচুপির অভিযোগ তুলতেন। বিরোধীদলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। দেশে পৌরসভা নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিএনপি সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে প্রশ্ন করা হলে- প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেন, বিএনপিকে সবসময় যেকোন নির্বাচনে আস্থায় আনার চেষ্টা করা হয়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেন সর্বোচ্চ সতর্ক স্থানে থাকে এবং কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হয় এজন্য তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ভোটারদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান, ইভিএম পদ্ধতিতে কারচুপির কোন সুযোগ নাই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ইভিএম তো আরও দুই বছর আগে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। আপনারা দেখেন এটা কিভাবে পরিচালিত হয়। এখানে কারচুপির কোন সুযোগ নাই। আপনারা ইভিএম এর উপর আস্থা রাখুন। আলোচনায় জানা গেছে নির্বাচনের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো, কোন রকমের ঝুঁকি নেই। কোন হুমকি নেই। তারপরও নির্বাচনকে সুষ্ঠ করার জন্য যদি অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজন হয় সেখেত্রে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। এছাড়া নির্বাচনে কেউ যদি ফৌজদারী অপরাধ করে থাকে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। তদন্ত হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, ঢাকা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ খলিলুর রহমান, সিনিয়র সচিব মোঃ আলমগীর, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান, সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নীপা,ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।