জাতীয়

৮ জেলা বন্যাকবলিত, আরও বিস্তৃত হতে পারে

মুক্তমন ডেস্ক : দেশের মধ্যে ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের আট জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যা আরও নতুন নতুন অঞ্চলে বিস্তৃত হতে পারে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা।

তিনি বলেন, দেশের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণটায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।

তিনি বলেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি এই মুহূর্তে বাড়ছে।

কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, মুহুরী, ফেনী, হালদা নদীর পানি ৭টি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন আলী রেজা।

‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই ও সারিগোয়াইন নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এ কারণে ওই সব অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।’

বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বন্যা আক্রান্ত জেলার জেলা প্রশাসক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে।’

বন্যা আরও বাড়বে কি না- জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার সেটার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকিটা আপনাদের আগামীকাল বলতে পারবো।

ত্রাণ কার্যক্রমের বিষয়ে- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, এরই মধ্যে বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ কাজের জন্য নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চাল ও শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের জেলা গুদামগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে। প্রকৃত রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা বন্যাদুর্গতদের কাছে আরও ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারবো।

‘আমরা খবর পেয়েছি ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী টিম ফেনীতে পৌঁছে গেছে। তারা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। ‌ সেখানে সেনাবাহিনীর ছয়টি বোট চলে গেছে।’

যুগ্মসচিব আরও বলেন, ফেনী জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৬০০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অন্যান্য জেলার প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ফেনী জেলা।

টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দিনগত রাত ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বৃষ্টির কারণে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।

এদিকে, ফেনীর ফুলগাজী-পরশুরামে বন্যার পানিতে আটকাপড়াদের উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী। উদ্ধারে কাজ করছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। প্রস্তুত রাখা হয়েছে হেলিকপ্টারও।৮ জেলা বন্যাকবলিত, আরও বিস্তৃত হতে পারেআগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী এবং হালদা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। ফলে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পুরো খাগড়াছড়ি। বিভিন্ন উপজেলায় পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ। খাগড়াছড়ি জেলা সদরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দীঘিনালায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button