ড্রিম গার্ল হেমা মালিনীর সাংসারিক টানাপোড়েন!
বিনোদন প্রতিবেদক :
বলিউডি ড্রিম গার্ল খ্যাত হেমা মালিনী ও এভারগ্রীন তারকা রেখার নিবিড় বন্ধুত্বের কথা ফিল্মী দুনিয়ার সবাই জানেন। হেমার সুখে – দুঃখে রেখার সম্পৃক্ততা অপরিসীম। ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ১৪ এর এক এপিসোডে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মেন্দ্র এবং মুমতাজ। বয়সের ভারে ধর্মেন্দ্র ন্যুজ হয়ে পড়েছেন। ঠিকঠাক করে কথা বলতে কষ্ট হয় তার। কিন্তু মুমতাজ এভারগ্রীন। এখনো তার গ্ল্যামার ফ্যাশন সেন্স অবাক করার মত। কত সুন্দরভাবে মুমতাজ নিজেকে মেনটেইন করছেন। ধর্মেন্দ্র’র নাম উচ্চারণের আগে বহু বিশেষণে তাকে বিশেষিত করা হয়। কিন্তু তার নারীলিপ্সুক স্বভাবের জন্য হেমা মালিনীকে প্রচুর মানসিক যাতনা সহ্য করতে হয়েছে। ড্রিমগার্লের প্রেমে পড়ে ধর্মেন্দ্র যখন তার প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কাউর চার সন্তান সানি, অজিতা, বিজেতা ও ববিকে উপেক্ষা করে ড্রিমগার্ল হেমাকে বিয়ে করেন তখন সবাই ধরে নিয়েছিল হেমাই হবেন ধর্মেন্দ্র’র শেষ গন্তব্য। এরপর কী হলো ? সেই কথাই লিখেছেন আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক মিলি সুলতানা।
প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কাউর কখনোই হেমাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেননি। এমনকী সানি – ববি দুইভাইও তাদের মায়ের চোখের জল সহ্য করতে পারতেন না। শোনা যায়, ববি নাকি তার বাবার গায়ে হাতও তুলেছিলেন। মায়ের সঙ্গে যখন ববিও আপসেট, তখন ববির ঘনিষ্ঠ বন্ধু সালমান খান তাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। ববিকে মানসিক শক্তি যোগাতে সাহায্য করেছিলেন সালমান খান। নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে বন্ধুকে সময় দিয়েছেন। জানা যায়, হিন্দু ধর্মে প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে নিষেধ বলে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে ১৯৮০ সালে হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র।
কিন্তু হেমার সাথে ঘর সংসারে স্থিতু হননি ধর্মেন্দ্র। তার ভেতরের সুন্দরী অন্বেষণ স্বভাব মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। আশির খ্যাতনামা নায়িকা অনীতা রাজের প্রতি আসক্তি জন্ম নেয় ধর্মেন্দ্র’র। হেমাকে অন্ধকারে রেখে অনীতা রাজের সাথে চুটিয়ে প্রেম অভিসার চালিয়ে যেতে লাগলেন ধর্মেন্দ্র। তিনি অনীতা রাজের নাম সুপারিশ করেছেন বিভিন্ন ডিরেক্টরদের কাছে। এভাবে অনীতার হাতে বেশ কিছু ছবি এসে পড়ে। অপ্সরা হেমা মালিনী দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি একদিন তার সুখের ঘর ছিনিয়ে নিতে কেউ সামনে এসে দাঁড়াবে। কেউ তার মুখশ্রীতে বলিরেখার জলছাপ দিতে আসবে।
বয়সে অনীতা রাজ ধর্মেন্দ্রর চেয়ে ২৭ বছরের ছোট ছিলেন। তারা একসাথে বেশ কয়েকটি ছবি করেছেন। অনীতা রাজ যখন হেমা মালিনীর যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠলেন হেমা তখন তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রেখাকে স্মরণ করলেন। আরও স্মরণ করলেন সানি দেওল ববি দেওলকেও। নিজের ঘর সংসার টিকিয়ে রাখতে সতীনের ছেলেদের সাহায্য চাইলেন। হেমার মনে হলো এমন ঘোরতর বিপদ থেকে ছেলেরাই পারবে তাকে রক্ষা করতে। যদিও মায়ের সতীনকে ঘৃণা করেন ববি সানি অজিতা বিজেতারা।
মোহময়ী তারকা রেখার কাছে গিয়ে মনের দুঃখে কান্না করেছেন হেমা মালিনী। ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রিতে রেখা অসম্ভব সাহসী আত্মপ্রত্যয়ী একজন নারী। বন্ধুর বিপদে রেখা এগিয়ে এলেন। বন্ধু হেমাকে বুকে আগলে রেখেছেন খারাপ সময়ে। শোনা গিয়েছিল বন্ধুর পক্ষ হয়ে অনীতা রাজের সঙ্গে রেখা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু অনীতা রাজ এসব কানে তোলার পাত্রী নন। তার মধ্যে জেদ চাপে ধর্মেন্দ্রকে তিনি নিজের করে নেবেনই নেবেন।
ধর্মেন্দ্র তখন অনীতা রাজের প্রেমে অন্ধ। হেমার মানসিক যন্ত্রণা বেড়ে চলছিল। রেখা হেমাকে পরামর্শ দিলেন আবারও যেনো ববি – সানির সাথে এই বিষয়ে হেমা কথা বলে নেন। এতেই কাজ হয়। পিতার প্রথম দফার মতিভ্রম তাদের মা প্রকাশ কাউরের জীবন জাহান্নাম বানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আর কোনোভাবেই তার দ্বিতীয় দফার মতিভ্রমকে আস্কারা দিতে রাজি ছিলেন না সানি – ববি দুই ভাই। তারা হেমা মালিনীকে ঘরে ফিরে যেতে পরামর্শ দিয়ে ছুটলেন অনীতারাজকে শায়েস্তা করার জন্য। মোক্ষম হুমকি দিয়ে অনীতা রাজের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিলেন। বেপরোয়া দুইভাইয়ের মারমুখী আচরণ দেখে ধর্মেন্দ্র’র জীবন থেকে তল্পিতল্পাসহ ছিটকে পড়লেন অনীতারাজ। সেই যে সটকে পড়লেন।
জানা যায়, এরপর ১৯৮৬ সালে অনীতা রাজ বিয়ে করলেন ব্যবসায়ী সুনীল হিঙ্গোরানিকে। তাদের একমাত্র ছেলের নাম শিবম হিঙ্গোরানি। ধর্মেন্দ্র পরকীয়া থেকে ফেরত এলেও হেমার সঙ্গে তার অদ্ভুত দুরত্ব দেখা দেয়। বহুদিন হেমা আলাদা বসবাস করেছেন। তবে এতকিছুর পরেও ধর্মেন্দ্র সম্পর্কে মিডিয়ায় কখনো নেতিবাচক মন্তব্য করেননি হেমা। সবসময় ধর্মেন্দ্র’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তাকে দুটো চমৎকার কন্যাসন্তান উপহার দেয়ার জন্য।