জাতীয়

জন্মদিনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা মির্জা ফখরুলের

স্টাফ রিপোর্টারঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার (২৬ জানুয়ারি) ৭৭ বছর পূর্ণ করলেন। ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ভোর থেকেই শুভাকাঙ্খী-প্রিয়জনের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন।

জন্মদিনে দাঁড়িয়ে ‘গণতন্ত্র ফিরে পাবার’ কথাও বলেছেন। টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘বুড়ো হয়ে গেছি, এখনতো বিদায়ের প্রান্তে। তারপরও মনে ভেতরে যে স্বপ্ন, যে প্রত্যাশা তা কিন্তু চিরঞ্জীব আছে, সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। বয়সের এই প্রান্তে এসে এই বিশ্বাসটুকু আমি করি আমাদের রাজনৈতিক যে সংকটগুলো যে চ্যালেঞ্জগুলো তা অধিকাংশই সমাধান করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফিরে যাবে সেই প্রত্যাশায় আছি আর কি।
শরীরটা ভালো যাচ্ছে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবার আমার গোটা পরিবারই ঢাকায়। একসাথে এবার এই দিনটি কাটছে। জন্মদিন নিয়ে নিজের অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, জন্মদিন আমি আসলে পালন করি না…. ৭৭ বছর বয়স পেরুলাম… বলতে পারেন একটা লং জার্নি। এই ৭৭ বছরে বহু পরিবর্তন দেখেছি, বহু ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। বহু জীবন দেখেছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি। বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পেয়েছি।

সকালে ঘুম ভেঙে দুই মেয়ের ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ শুনে, আমার নাতি-নাতনিরাও উইস করেছে নানাকে… এটা অন্যরকম এক আনন্দ। ২৬ জানুয়ারি জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকেই বন্ধু, স্বজন, নেতাদের অনেকে টেলিফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সকাল বেলা স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও এক কাপ দিয়ে জন্মদিনের উইশ করেছেন। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সিনিয়র নেতারাও টেলিফোন করেছেন।
ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি এবং এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন ফখরুল। ঢাকা কলেজ, দিনাজপুর কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।

১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে জিতে হন চেয়ারম্যান। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী এস এ বারীর একান্ত সচিব ছিলেন ফখরুল।

১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি, পরে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব পদে উঠে আসেন তিনি। ২০১১ সাল থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হন।

বিএনপির শীর্ষ পর্য়ায়ের নেতৃত্বে আসার আগে তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রথম সহসভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন।

ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফখরুল। ২০০১-২০০৬ মেয়াদের বিএনপি সরকারে তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি শপথ না নেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপির জিএম সিরাজ সংসদে যান।

মির্জা ফখরুল বলেন, জন্মদিন মানে আরো একটি বছর চলে গেছে। অন্যান্য বছর বড় মেয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে টেলিফোন করে। এবার কিন্তু সেটি হয়নি। বড় মেয়ে তার পরিবার কয়েকদিন আগেই ঢাকায় এসেছে।ফলে বড় মেয়ে-ছোট মেয়েসহ আমার গোটা পরিবারই এখন ঢাকায়। বলতে পারেন আমরা মেয়েরা ‘হ্যাপি বার্থে ডে’ বলল। আপনার ভাবীও বার্থ ডে‘র উইশ করেছে।

দুই মেয়ে নিয়েই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রাহাত আরা বেগমের সংসার। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ অস্ট্রেলিয়ায় স্বামী-সন্তান নিয়ে আছেন। সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ নিয়ে এখন ক্যানবেরার ফেডারেল মেডিকেল কাউন্সিলের সিনিয়র সাযেন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। কয়েকদিন আগেই শামারুহ মির্জা ও তার স্বামী ঢাকায় এসেছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ধানমণ্ডির সানি ডেল স্কুলে শিক্ষকতা করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button