‘আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী আন্দোলনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’
প্রতিনিধি, ঢাবিঃ আহত ও সংশ্লিষ্ট ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী আন্দোলনের জন্য কর্মসূচি চূড়ান্ত করা বলে উল্লেখ করেছেন সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা কলেজ শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মামুন আহমেদের পদত্যাগ ও শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার বিষয়ে এই কথা জানান তিনি।
এসময় তিনি বলেন, সংঘর্ষে সাত কলেজের আহত ও সংশ্লিষ্ট সকল ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেবো সেটিই হবে পরবর্তী সময়ের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এমনিতেই সবকিছু মেনে নেয়া হবে না, প্রয়োজনে আরো ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী জাকরিয়া বারী সাগর বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থেকে বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। এই দাবি আজ পূরণ হওয়ার পথে। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন ৭ কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করতে সময় প্রয়োজন। এটির মডেল কী হবে সেটি নিয়ে কাজ চলছে। শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের দাবির বিষয়ে শুরুর দিক থেকে ইতিবাচক ছিলেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধীনে চরম ভোগান্তিতে ছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের বড় সমস্যা ছিলো ঢাবির অধীনে থেকে আমাদের পরিচয় সংকট। আমরা সরকারকে আমাদের সমস্যার বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। এসময় সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো বুঝতে পেরে সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
এর আগে দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠকের পর দাবি পূরণের আশ্বাসে পেয়ে ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন সাত কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিরা।
এবিষয়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সচিবালয়ে বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাত্র প্রতিনিধি মঈনুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার আমরা ছয়দফা দাবি জানিয়েছিলাম যার মধ্যে ঢাবির অধিভুক্ত থেকে বাদ দেওয়ার দাবিটি মানা হয়। বাকি পাঁচ দফা মেনে নিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিছু কিছু দাবি মেনে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে তিন দিন সময় নিয়েছে। তাই আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ছয় নাম্বার দাবি ছিলো, ঢাবির রাস্তা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া। ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত আছে বলে আমাদের জানানো হয়।
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হামলার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের তদন্তের জন্য তিন দিন সময় নিয়েছে প্রশাসন- এমনটি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের আরেকটি দাবি ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদের পদত্যাগ। আজকের (মঙ্গলবার) বৈঠকে আমাদের জানানো হয়- এই বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সম্পৃক্ত। উপাচার্যের সাথে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের আলাপ-আলোচনা করে এটি সমাধান করতে বলা হয়েছে। আমরা ঢাবি উপাচার্যের সাথে মিটিং করে এটির সমাধানে আসবো।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের শহিদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ড. মামুন আহমেদের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ে দাবি মানা না হলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাওয়েরও ঘোষণা দেয় তারা।