জাতীয়

গুলশানে স্পা সেন্টারে অসামাজিক কর্মকাণ্ড,নেতৃত্ব দিচ্ছে স্পা রাণী ইভা

মোহাম্মদ জুবায়ের আলমঃ রাজধানীর গুলশানে যিনি (১১ জানুয়ারি) গুলশান দুইয়ের ৪৭ নম্বর সড়কের ২৫ নম্বর বাড়িতে স্থাপিত স্পা সেন্টারটিতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানের সময় বাড়ির চারতলা লাফিয়ে পড়ে এক তরুণীর মৃত্যু হয় ঐ সময় নারী পাচারের মামলায় ইতিপূর্বে জেলেও গিয়েছিলেন ইভা, আবারো আলোচনায় তিনি। তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ থাকলেও, পুলিশ এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের নিরবতা এবং সহযোগিতার কারণে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গুলশান ২৪ নাম্বার রোডের ৯১/বি বাড়ির দ্বিতীয় তালায় অবস্থিত তার স্পা সেন্টার “ঢাকা পেলেস” দীর্ঘদিন ধরেই চলছে, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে।

স্থানীয় সুশীল সমাজ এবং সাংবাদিকদের দাবি, স্পা-রাণী ইভা এখনো অনিয়ম এবং অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন অথচ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দ্বারা তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে গুলশান থানার পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের নিরবতা নিয়ে এলাকাবাসী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর ক্ষোভ: স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন স্পা-রাণী ইভা জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তার পুরনো ব্যবসা আবারও চালু করেছেন, যদিও এর আগে তার বিরুদ্ধে নারী পাচারের অভিযোগ ছিল। “ঢাকা পেলেস” নামক স্পা সেন্টারটি গুলশান এলাকায় অবস্থিত এবং এটি এখন সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের দেয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এবং গুলশান থানা পুলিশের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এলাকাবাসীকে হতাশ করে তুলেছে।

থানা পুলিশ এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের নিরবতা:

এ বিষয়ে গুলশান থানার কর্তব্যরত ওসি’র বক্তব্যে জানা গেছে, তিনি থানায় নতুন যোগদান করেছেন এবং স্পা-রাণী ইভা ও তার কার্যক্রম সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। তাছাড়া তিনি সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে খুব দ্রুত স্পা-রাণী ইভার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। যাতে আর কখনোই এ অবৈধ ব্যবসার সাথে স্পা-রাণী যুক্ত হতে না পারেন তার দিকে নজর রাখবেন।

তাছাড়া ঢাকা উত্তর-সিটি কর্পোরেশন তথা (বিএনসি) প্রশাসক প্রদান মোঃ মাহমুদুল হাসান এনডিসি জানান, স্পা সেন্টারগুলি সম্পর্কে সঠিক নিয়মাবলী ও পর্যবেক্ষণ চালানোর ক্ষেত্রে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। স্পা সেন্টারের চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে সম্প্রতি তাদের কাছে কোনো নতুন অভিযোগ বা অনুসন্ধান পাওয়া যায়নি, তবে সুশীল সমাজ এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের দৃষ্টিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে গুলশান থানা পুলিশ এবং সিটি কর্পোরেশন সমন্বয়ের মাধ্যমে যদি কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে সিটি কর্পোরেশন দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

আইজিপি এবং দুদক বরাবর চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত:

এতদিনের নিরবতার পর সাংবাদিকরা এবং স্থানীয় সুশীল সমাজের সদস্যরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইজিপি এবং দুদক বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হবে, যাতে দ্রুততার সাথে এ বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের মতে স্পা-রাণী ইভার অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

এলাকার সুশীল সমাজের সদস্যরা বলেন, “এতদিন ধরে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় একে বড় প্রশ্নবোধক তৈরি করছে। আমাদের একটাই দাবি, অবিলম্বে আইন অনুযায়ী স্পা সেন্টারটির কার্যক্রম বন্ধ করা হোক।”

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ ও সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির দ্রুত পদক্ষেপ আশা করা যাচ্ছে, যাতে এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button