জাতীয়

বিএমডিসি সভাপতির আশ্বাসে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অবরোধ স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টারঃ দিনভর অবরোধের পর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতির আশ্বাসে অবরোধ স্থগিত করা হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই অবরোধ তুলে নেন এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষা এগিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনরত অকৃতকার্য ও অনিয়মিত মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।

তবে বিএমডিসির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না পেলে বৃহস্পতিবার নতুন কর্মসূচি দিতে পারে বলে জানান তারা।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী আমার দেশকে এ তথ্য জানান।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে রাজধানীর বিজয়নগরে বিএমডিসির কার্যালয়ের সামনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিএমডিসির মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে করে ওই ভবনে বিএমডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও আটকা পড়েন। এমনকি বাইরে থেকে কাউকে ভিতরেও প্রবেশ করতে দেননি তারা।

আন্দোলনরতরা জানান, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের নভেম্বর মাসে। ওই পরীক্ষায় প্রায় এক হাজারের মত পরীক্ষার্থী এক বা একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হন। তাদের আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও সেটি করেনি বিএমডিসি। আগামী মে মাসে ২০১৯-২০ ব্যাচের সঙ্গে তাদের পরীক্ষা নিতে চাচ্ছে। যেটি গ্রহণযোগ্য নয়। মার্চের মধ্যে পৃথকভাবে এটি আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আমার দেশকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা দেড় বছর পিছিয়ে পড়েছি। মে মাসে পরীক্ষা নিলে আরও পিছিয়ে যাব। আমাদের পরের ব্যাচকে আমাদের আগে আনতে চাচ্ছে। আর আমাদের সময় পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে। দুই ব্যাচের পরীক্ষা একসঙ্গে নিতে চাচ্ছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী আমরা আলাদা একটা পরীক্ষা পাই এবং এটা আমাদের ন্যায্য দাবি। আমাদের যদি এখন আরও দুইমাস পিছিয়ে দেয় তাহলে এমডি, এমএস, এফসিপিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারব না।’

তিনি আরও বলেন, অবরোধ চলাকালে কিছু মানুষের হয়তো কষ্ট হয়েছে। কিন্তু আমাদের করার কিছু ছিলনা। ইফতারের আগে সন্ধ্যা বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আমাদেরকে ফোন করেন। তিনি ব্যবস্থার নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ না নিলে আমরা বৃহস্পতিবারও নতুন কর্মসূচি দেব।’

এদিকে বিএমডিসি রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি এমন এক হাজারের মত শিক্ষার্থী আছে। মে মাসে পরীক্ষার যে সূচি হয়, সেখানেও অনুত্তীর্ণদের অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে। এটাই হলো নিয়ম, এর বাইরে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা চাচ্ছে একটা মধ্যবর্তী পরীক্ষা, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত একটা কাজ। পরীক্ষা কিভাবে নেবে, রুটিন কি হবে সেটা ঠিক করে ডিন অফিস। শিক্ষার্থীরা দাবি করছে তাদের টাইমমত পরীক্ষা নিতে হবে নইলে তারা পিছিয়ে যাবে। একটা সহজ বিষয়কে বিএমডিসির ওপর চাপিয়ে জটিলতা তৈরি করা হয়েছে।’

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক চিকিৎসক মো. মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক হয় বিএমডিসির। ওই সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, বিএমডিসির কারিকুলাম অনুযায়ী বছরে দুইবার মে এবং নভেম্বর মাসে পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম। এ অবস্থায় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসের পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও অনিয়মিত মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা মার্চ মাসে নেওয়ার সুযোগ নেই। পরীক্ষা নিলে তা হবে বিএমডিসির কারিকুলামের পরিপন্থা। কারিকুলাম অনুযায়ী পরবর্তী পরীক্ষা আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button