সোনালী ব্যাংকের দুই শাখার গ্রাহকদের টাকা গায়েব
মুক্তমন ডেস্ক : টাঙ্গাইলে সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখায় বেশ কিছু গ্রাহকের হিসাব নম্বর থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। টাকা কাটার পর ওইসব গ্রাহকের মোবাইল নম্বরে একটি ক্ষুদেবার্তাও (এমএমএস) পাঠানো হয়েছে। এসব ক্ষুদেবার্তা (এমএমএস) নিয়ে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকালে গ্রাহকরা সোনালী ব্যাংকের ভুঞাপুর শাখায় হাজির হলেও কোনো সমাধান পাননি।
সরেজমিনে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে, হিসাব নম্বর থেকে টাকা কেটে নেওয়ায় ১৫-২০ জন গ্রাহক ব্যাংকের ভেতরে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন।
এ সময় ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংক থেকে অসংখ্য চাকরিজীবী ব্যক্তিগত ঋণ নিয়েছেন। ঋণের সেই টাকা তাদের প্রতিমাসের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিমাসে ঋণের টাকা কেটে নেওয়ার পরও ২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ওইসব গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে থাকা সব টাকা একসঙ্গে কেটে নেওয়া হয়েছে। কি কারণে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে টাকা কেটে নিয়ে মোবাইলে এসএমএস পাঠনো হয়েছে।
একই ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের কালিহাতী সোনালী ব্যাংক শাখাতেও। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক হাসান বিন রশিদ বলেন, সকালে সোনালী ব্যাংক থেকে মোবাইলে এসএমএস এসেছে। এসএমএস পড়তে গিয়ে দেখি আমার অ্যাকাউন্টে জমাকৃত এক লাখ ৮১ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। পরে ব্যাংকে এসে যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোনো সমাধান পেলাম না।
গ্রাহক শামীমা আক্তার বলেন, অ্যাকাউন্টের সব টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে ঋণ ছিল। কিন্তু সেটা প্রতিমাসে কেটে নেওয়া হয়। একসঙ্গে অ্যাকাউন্টের সব টাকা কীভাবে কেটে নিল? ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনো সমাধানও দিলো না।
ভুঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ওমর ফারুক বলেন, স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাখ ৫১ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন টাকা কেটে নিয়েছে সেটা জানি না। শুনেছি অনেক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকদের টাকা গায়েব হওয়ার বিষয়ে ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (ম্যানেজার) খন্দকার রাইসুল আমিনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল অফিসের (ঘাটাইল) ডিজিএম আব্দুল্লাহ ফয়সাল বলেন, সিস্টেমের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে অটো টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। সিস্টেমের সমস্যার কারণে এটা হয়েছে বলে প্রধান কার্যালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত অবস্থায় আছি। তবে গ্রাহকদের টাকা আবার ফেরত দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ভুঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী শাখা সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকদের সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট থেকে ম্যানেজার কর্তৃক প্রায় ৫ কোটি আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।