শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, দেওয়াল লিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন
মুক্তমন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার ‘গণঅভ্যুত্থানে’ শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে পুলিশের তৎপরতা না থাকায় বিভিন্ন সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
হাতে লাঠি, মুখে বাঁশি নিয়ে ইশারায় তারা সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন। শুধু তাই নয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে লুট হওয়া জিনিসপত্র ফেরত, বাজার মনিটরিং, রাত জেগে পাহারা দেওয়ার মতো কাজে মগ্ন হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ দেওয়ালে দেওয়ালে লিখছেন নানা স্লোগান, আঁকছেন গ্রাফিতি। এসবের মধ্য দিয়ে সমাজের বৈষম্য নিরসন এবং আন্দোলনে শহিদদের স্মরণ করছেন। এ দায়িত্ব পালনকালে তারা সহিংসতা, দুর্নীতি ও অপকর্মমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ করেন। পাশাপাশি মাতৃভুমি রক্ষার অঙ্গীকার করেন।
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন। নেতারা বলেন, যতদিন বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য দপ্তর সংস্কার করতে না পারব, ততদিন আমরা মাঠ ছাড়ব না।
সাঘাটায় ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি হয়েছে। এ সময় এক মিনিট নীরবতা ও শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দুর্গাপুরে স্থানীয় বাজারগুলোতে মনিটরিং শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। সাধারণ ক্রেতা রুহুল আমিন জানান, শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। ফুলপুরে বাসস্ট্যান্ড গোলচত্বর মোড়সহ বিভিন্ন দেওয়ালে শিক্ষার্থীদের বিজয়ের ছবি আঁকতে দেখা গেছে। চন্দনাইশে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সড়কে চলাচল, সড়ক পারাপার, দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতনার বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করছেন। পাবনার ফরিদপুরে রাস্তা পরিষ্কার করে ছাত্র-ছাত্রীরা আলপনা এঁকেছেন। তাদের এ কাজে এলাকাবাসীও খুশি। কমলনগরে চরজাঙ্গালিয়া খালের এক কিলোমিটার পরিত্যক্ত এলাকার বর্জ পরিষ্কার করার মাধ্যমে খালটি সচল করার ঘোষণা দিয়ে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন শিক্ষার্থীরা। কমিটিতে রয়েছেন মো. ইকবাল হোসেন ফারাবি (শাবিপ্রবি), আরাফাত হোসেন কারণ (বুয়েট), মো. আফরোজ হৃদয় (লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ), শিহাব উদ্দিন রুপক (ইউল্যাব), হাসিবুল ইসলাম (চবি), মুজাহিদুল ইসলাম শান্ত (ঢাকা কলেজ)। বড়াইগ্রামে হাট-বাজারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ইজারাদারের ব্যবস্থাপক প্রদীপ পাল বলেন, এতদিন যা করেছি ভুল করেছি, ভবিষ্যতে আর এমন করব না। ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হাটের ইজারাদার ক্ষমা চাওয়ায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে। গোয়ালন্দে বাজার মনিটরিং ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিষ্কার করলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কালকিনিতে পৌর এলাকার ভূরঘাটা বাজারে ব্যবসায়ীদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তারা। বড়লেখায় পৌর শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে স্বেচ্ছায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে রোভার স্কাউট, বিএনসিসি ও নিসচা’র সদস্যরা। ফুলপুরে বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে আনসার ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করে যাচ্ছেন। ভুরুঙ্গামারীতে ক্রেতাকে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগে সাহা ফিলিং স্টেশনে বন্ধ করে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। চিলমারীতে যানবাহনের শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা ও খাবারের দোকানে খাবারের মান তদারকিসহ বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।