অলিক ম্রি’র শাস্তি চায় স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি

স্টাফ রিপোর্টারঃ সাম্প্রদায়িক উগ্রপন্থী’ অলিক ম্রির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা চায় স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি । সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে নাগরিক কমিটির কাছে এ দাবী জানান তারা।
তারা বলেন, স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাবী ও রাষ্ট্রদ্রোহী লাল সন্ত্রাসী রাখাল রাহার অপসারণের দাবীতে মতিঝিলের এনসিটিবি ভবনের সম্মুখে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করাকালে রাখাল রাহার (সাজ্জাদ) যোগসাজশে জুলাই রাজাকার অলিক ম্রি, ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আরমানুল হকসহ বেশ কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে পুলিশের চারস্তর নিরাপত্তা বেষ্টনী (ব্যারিকেড) ভেদ করে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে। যা কিনা ইতোমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ার ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
ফ্যাসিস্ট বিরোধী জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের (জাতীয় নাগরিক কমিটিকে) সুপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির দাবী নিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী যখন প্রায় প্রতিদিন মাঠে নামেছে আর উক্ত সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে মৌন সমর্থন প্রকাশ করে তখন দেশবাসীর সামনে দেশের সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে সংগঠনটির উদাসীনতাই প্রকাশ পায় এবং দেশপ্রেমিক জনগণ সংগঠনটির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে।
তারা বলেন,আরো দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, অবিরত বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবী জানিয়ে আসা অলিক ম্রি গংদের বিরুদ্ধে জুলাই গণভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, অথচ জাতীয় নাগরিক কমিটির ধানমন্ডি শাখার সদস্য দেশপ্রেমিক ছাত্রনেতা ইঞ্জি: শাহাদাৎ ফরাজী সাকিব বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘আদিবাসী’ শব্দের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ও স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি আয়োজিত দেশের অখণ্ডতা রক্ষার কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে জাতীয় নাগরিক কমিটি অপ্রত্যাশিতভাবে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে। যা দেশের জনসাধারণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে ও স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, অলিক ম্রি হচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সেই ধূর্ত লোক, যে কিনা কোটাবিরোধী জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিপক্ষে তথা কোটার পক্ষে অবস্থান নেয়। অথচ ৫ আগস্টের পর জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক বনে যান।
নাগরিক কমিটির প্রতি দেশবাসীর পক্ষ থেকে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি আহ্বান জানাচ্ছে, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা রক্ষা ও দেশের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষার স্বার্থে জাতীয় নাগরিক কমিটি জুলাই অভ্যুত্থানের বিরোধী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী অলিক ম্রি’র বিষয়ে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশপ্রেম ও দেশের অখণ্ডতার বিষয়ে দায়বদ্ধতা স্পষ্ট করবে।
উল্লেখ্য, আদিবাসী দাবী করার বিষয় নয়। যারা কোন ভূখণ্ডে স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাস করে আসছে তাদেরকেই আদিবাসী বলা হয়। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের নামকরণও হয়েছে এদেশের আদি নিবাসী ও সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর নামে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এদেশের সমতল ও পাহাড়ে বাঙ্গালীরাই স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাস করে আসছে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গাসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে এদেশে বসবাসের জন্য এসেছে। সংখ্যায় কম হওয়ায় যাদেরকে আমরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলি। আমরা কোনো জনগোষ্ঠীর অধিকার হরণের বিপক্ষে, সমান অধিকারের পক্ষে। সবাই এদেশের নাগরিক।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, ২০০৭ সালের পর থেকে দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কারণে গুটিকয়েক ব্যক্তি জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সুবিধা নিতে নিজেদেরকে ‘আদিবাসী’ হিসাবে দাবি করার অপচেষ্টা করছে। যা সুস্পষ্ট দেশবিভাজন ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ, যা এদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ মেনে নিতে পারেনা। যে কোনো ব্যক্তি কিংবা সংগঠন যে-ই হোক যদি দেশের সার্বভৌমত্ব ও দেশ বিভাজনের ষড়যন্ত্রকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় সার্বভৌমত্বের স্বার্থে দেশের জনগণ এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না।
সুতরাং স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি ২৪’র গণঅভ্যুত্থানের সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতি দেশভাগ ও দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী অলিক ম্রি নামক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’র বিরুদ্ধে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি দায়বদ্ধতার প্রমাণ বহণের আহ্বান জানাচ্ছে।