বরিশালসহ ৫ জেলায় বাস ধর্মঘট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশালঃ বরিশাল বিএম কলেজের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া না নেওয়ার জেরে শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও ৫টি বাস ভাংচুরের প্রতিবাদে ৫ জেলার ১৮ টি রুটে ধর্মঘট পালন করেছেন শ্রমিকরা।
২৮ জানুয়ারি রাত ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ ধর্মঘটের ডাক দেন। ফলে বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৫ জেলার ১৮টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আকস্মিক এ বাস ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। বাস মালিক ও শ্রমিকদের জানমালের নিশ্চয়তা দেওয়াসহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এ বাস ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানান বাস শ্রমিকরা।
বাস শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে তাদের উপর চড়াও হন শিক্ষার্থীরা। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাদের মারধর ও গাড়ি ভাংচুর করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে বিএম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী বরিশাল ঝালকাঠি সড়ক পথে একটি বাসের হেলপারের সাথে হাফভাড়া নিয়ে কথার কাটাকাটি হয়। তারা বাস মালিক কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার দিতে পারতেন। কিন্তু ছাত্ররা তা না করে শ্রমিককে মারধর বাস ভাংচুর ও বাস টার্মিনালে হামলা করেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাসের হেলপার হাফভাড়া না নিয়ে উলটো ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। খবর পেয়ে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা টার্মিনালে গিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় বাস শ্রমিকরা তাদের উপর হামলা করে। শ্রমিকদের হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলেন, তাদের সহপার্টির সাথে দুর্ব্যবহার করার খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আমরা মহাসড়ক অবরোধ করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছিলাম। এ বিষয়ে বাস টার্মিনাল সংশ্লিষ্ট কেউ আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। উলটো শ্রমিকরা ধারাল অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ধাওয়া দেয়। তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। তাই মারধরের ঘটনায় জড়িত শ্রমিকদের বিচার ও হাফভাড়া নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এদিকে শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বাস ধর্মঘট ডাকায় দুর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা। বিকল্প পথে গন্তব্য পৌঁছতে অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। ফাতেমা আক্তার আখি নামের বাউফলের এক যাত্রী বলেন, তিনি বাস ধর্মঘটের কথা জানেন না। কি করে গন্তব্যে পৌঁছাবেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি।
বরিশাল বিভাগীয় বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। কিন্তু ছাত্ররা সে পথে না গিয়ে টার্মিনালে হামলা-ভাংচুর করে। এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাস চালাবে না বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। বরিশাল ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক বিদ্যুৎ চন্দ্র দে বলেন, রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী চেষ্টা করে যাচ্ছে।