মধ্যরাতে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট এলাকায় ঢাবি-সাত কলেজ উত্তেজনা
প্রতিনিধি, ঢাবিঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের বাসভবন ঘেরাও করতে এলে সাত কলেজ শিক্ষার্থী ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এসময় একাধিক ককটেল বিস্ফোণের ঘটনা ঘটে। এতে দু’পক্ষের অন্তত চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশের নিক্ষেপ করে।
বোরবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় নীলক্ষেত তোরণের নিচে মিছিল নিয়ে আসে সাত কলেজের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় তোরণ গেইটে পুলিশ তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আসার খবর শুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ছুটে আসেন শিক্ষার্থীরা। এসময় নীলক্ষেত তোরণে মুখোমুখি অবস্থানে থেকে উত্তপ্ত স্লোগান দেন দু’পক্ষ। তবে সাড়ে ১১টা নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেটের দিকে পিছু হটেন। পরে পাল্টা ধাওয়া দিলে ঢাবির শিক্ষার্থীরা স্যার এ এফ রহমান হলের দিকে অবস্থান নেন।
রাত সাড়ে ১২টায় নীলক্ষেতে পুলিশের জলকামান এলে ঢাবির শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ নিজ নিজ হলে ফেরত যায়। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হাসনাত আব্দুল্লাহ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে গেলে তোপের মুখে ফেরত আসেন। এসময় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দেন। রাত পৌনে ১টার দিকে ইডেন কলেজের প্রধান ফটক খুলে নারী শিক্ষার্থীরা বের হন এবং নীলক্ষেতে অবস্থান নেন।
এদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সবধরনের শ্রেণি কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ। পরে রাত ১টা ৫৫ মিনিটে জনসংযোগ দফতর থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে আমার অফিসে আলোচনাকে কেন্দ্র করে রাতে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছে তা দুঃখজনক। এতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আমি বিশ্বাস করি সুষ্ঠু পরিবেশে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে এই ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে যে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে তা প্রশমনের জন্য সবপক্ষকে ধৈর্য ধারণের জন্য আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে আসা সাত কলেজে শিক্ষার্থীদের প্রতি ‘অশোভন’ আচরণের অভিযোগ এনে সন্ধ্যায় সায়েন্সল্যাব, টেকনিক্যাল ও তাঁতিবাজার সড়ক অবরোধ শেষে ঢাবি উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে সংঘাতে না জড়ানোর জন্য দু’পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ। নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। এসময় তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীই যেনো কোন ধরনের সংঘাতে না জড়াই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই সাত কলেজ সংক্রান্ত বিষয় এড্রেস করতে দিন। সংঘাত সম্ভাব্য সকল সমাধানকে আরও জটিল করে তুলবে। পতিত স্বৈরাচার আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সংঘাত তৈরি করে ফায়দা লুটতে চায়। আমরা যেনো সেই সুযোগ তৈরি করে না দেই।