সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ
মুক্তমন ডেস্কঃ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসানের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সওজ-এর উন্নয়ন প্রকল্পে ২৯ হাজার ২৩০ কোটি থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার
সৈয়দ মঈনুল হাসান দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। বুয়েটের ছাত্রলীগ নেতা এবং বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সদস্য হিসেবে তার রাজনৈতিক পরিচিতি সুপ্রতিষ্ঠিত। তার ক্ষমতার দাপটে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাঁচুরিয়া গ্রামে নিজের আত্মীয়স্বজনদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর অভিযোগ রয়েছে। তার চাচাতো ভাই জেলা পরিষদের সদস্য এবং আপন ভাই কচি মিয়াকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করা হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ
সৈয়দ মঈনুলের বিরুদ্ধে নিয়োগ, পোস্টিং বাণিজ্য এবং বিপুল অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। জানা গেছে, তিনি সড়ক বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের পদায়নে নিজের ঘনিষ্ঠজনদের প্রভাবিত করেছেন। এমনকি শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ লিটন চৌধুরীর মাধ্যমে বিভিন্ন পদে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
জুলাই আন্দোলনে অর্থায়ন
২০২৫ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সহিংস হামলায় মঈনুল হাসান সরাসরি অর্থায়ন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বিপ্লবী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবিপ্লব ঘটানোর জন্য আওয়ামী লীগের বলয় তৈরিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।
বিদেশে অর্থপাচার
যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনা, সন্তানদের পড়াশোনা করানো এবং বিপুল অর্থপাচারের অভিযোগে সৈয়দ মঈনুলের বিরুদ্ধে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র জনতার দাবিতে তার সম্পদের হিসাব তদন্ত এবং বিদেশে পালানোর পথ রুদ্ধ করার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
পরিবারের প্রভাব
তার স্ত্রী ফেরদৌসি শাহরিয়ার বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অফ মিশন হিসেবে কাজ করেছেন।
সৈয়দ মঈনুল হাসানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের দ্রুত তদন্ত এবং তাকে বিচারের আওতায় আনার জন্য জনমনে দাবি উঠেছে। তবে, এত অভিযোগের পরও এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।