বিশ্ব

গাজা-ইসরাইলি বন্দি বিনিময় ৪ ইসরাইলি নারী সেনার বিনিময়ে মুক্ত ২০০ ফিলিস্তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্তানুসারে দ্বিতীয় দফায় চার ইসরাইলি নারী সেনাকে মুক্তি দিয়েছে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। শনিবার গাজা শহরের ফিলিস্তিনি স্কয়ারের রেড ক্রসের কর্মকর্তাদের হাতে তাদের তুলে দেওয়া হয়।

মুক্তিপ্রাপ্ত চার ইসরাইলি নারী সেনা হচ্ছেন, কারিনা আরিয়েভ, ড্যানিলিয়া গিলবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। মুক্তি পাওয়া চার নারী সেনাকে ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় সংবর্ধনা দেওয়ার মাধ্যমে রেড ক্রসের হাতে তুলে দেন হামাস যোদ্ধারা।

অনুষ্ঠানে রেড ক্রসের কর্মকর্তা ও হামাসের যোদ্ধারা ছাড়াও ইসলামিক জিহাদ ও অন্য সংগঠনগুলোর যোদ্ধা, সাংবাদিক ও সাধারণ ফিলিস্তিনিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে শনিবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী- আইডিএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মুক্তি পাওয়া নারী সেনাদের রেড ক্রসের কাছ থেকে গ্রহণ করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।

বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তি পাওয়া চার জিম্মি বর্তমানে আইডিএফের বিশেষ বাহিনীর সংস্পর্শে রয়েছেন। ইসরাইলে পৌঁছানোর পর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

মুক্তি যাওয়া চার ইসরাইলি সেনা গাজার কাছে ইসরাইলের নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটিতে কর্মরত ছিলেন। গাজায় সামরিক নজরদারি করা একটি ইউনিটের সদস্য এই চার সেনাকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের অভিযানের সময় জিম্মি করে নিয়ে আসা হয়।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গাজার স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের হাতে থাকা ইসরাইলি নাগরিক আরবেল ইয়েহুদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।

অন্যদিকে হামাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আরবেল ইয়েহুদ জীবিত আছেন এবং আগামী শনিবার তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।

চার নারী সেনার বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দি। এর মধ্যে ৭০ বন্দিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বাইরে ভিন্ন দেশে নির্বাসনে পাঠানো হবে। আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও তুরস্ক নির্বাসিত এই ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার জেরে গাজাকে বিভক্ত করা নেতজারিম করিডরের কাছে যেতে ফিলিস্তিনিদের সতর্ক করে এক বার্তা দিয়েছেন ইসরাইলি সামিরক বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হার্জেই হালেভি। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি জানান, নতুন কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত উত্তর গাজায় স্থানীয়দের ফেরার পথ বন্ধ থাকবে।

গাজায় এ পরিস্থিতির মধ্যে পশ্চিম তীরে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। পশ্চিম তীরের জেনিনে চলমান ‘আয়রন ওয়াল’ অভিযানে ইসরাইলি বাহিনী ‘বেআইনি প্রাণঘাতী শক্তি’ ব্যবহার করছে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ।

শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র সামিন আল-খিতান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ অভিযানে মারাত্মক উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।’

শুক্রবার পর্যন্ত জেনিনে হামলায় অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি অভিযানের মুখে জেনিনে ঘরবাড়ি ছাড়ছেন শত শত বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহরটিতে ড্রোন থেকে অভিযানের বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছিল।

ইসরাইলি বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, শহরটির শরণার্থী শিবিরে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতির তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button