ব্যাংকগুলো কি ডেসটিনি’র আধুনিক রুপ হতে যাচ্ছে?
সাইয়েবা ফিহা : শিরোনাম দেখে চমকে ওঠার আগেই একটু ভাবার সময় এসেছে বুঝি। যদিও এটা নিতান্ত-ই আমার ব্যক্তিগত অবজারভেশন।
একটা সময় টাই পরা মানুষ দেখলে মানুষ তাঁর দিকে একবার নয় দু’বার তাকাতো। শ্রদ্ধা আর ভক্তির অজানা দিক প্রকাশ পেতো। সবাই ভাবতো লোকটা হয়তো বেশ জ্ঞানী-গুনি আর ভালো পোস্ট এ জব করে। ব্যাপারটা এমনই ছিল। কিন্তু কোথা হতে ডেসটিনির মতো এম এল এম কোম্পানি ও একটা প্রাইভেট ব্যাংক তাদের বিশাল কর্মিবাহিনীকে টাই পরিয়ে দিল। যাঁরা কখনো শার্ট-প্যান্ট ঠিকমতো পরেনি তাঁদেরকে টাই পরিয়ে ছেড়ে দেবার ফলে যা হলো তা ভয়াবহ। ডেসটিনি টিকে থাকা পর্যন্ত টাই পরা কোনো লোককে দেখলেই সবাই ভাবা শুরু করলো এই বুঝি ডেসটিনির কেউ। বাসে এমনকি পাবলিক প্লেসে এই টাই পরা মানুষ দেখলেই সবাই সরে যাওয়া শুরু করল। কারণ হিসেবে এই টাই পরা জনগণ কথা শুরুই করতো ডেসটিনির মেম্বার হবার আমন্ত্রণ জানিয়ে। কাছের কত পরিচিত ও বন্ধুদের যে এড়িয়ে চলেছি তা ভাবলেও এখন বিস্ময় জাগে।
আচ্ছা, ডেসটিনি না হয় চলে গেল, তাই বলে বিপদ কি আসলেই শেষ? না, যেখান থেকে ডেসটিনি শেষ সেখান থেকে-ই ব্যাংকিং ডেসটিনি শুরু। টাই পরা একটা সৌন্দর্য। এদিকে রোদ আর গরমের মাঝে যখন টি-শার্ট পরে থাকা দায় সেই অবস্থায় মাঠে-ময়দানে টাই পরে ঘুরে বেড়ানো শুরু করলো ব্যাংকাররা। অফিসে টাই থাকতে পারে তাই বলে ধুলা-বালি আর এই দেশের টেম্পারেচারে টাই বাইরে কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা প্রশ্ন করাই যায়। অনেকে-ই গরমে স্ট্রোক করার মতো অবস্থা, তবুও টাই খুলছে না!
এবার ব্যবসার কথায় আসি। ব্যবসা সবাই করে। একজন শিক্ষিত লোক যখন শুধু অসুস্থ প্রতিযোগিতার কাছে বলি হয়ে একজন অন্য প্রতিষ্ঠানের সামান্য কর্মচারীর কাছে মান-মর্যাদা হারায় তা আসলে-ই কতটা যৌক্তিক? একজন এসএভিপি যিনি নামকরা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করেন। গাড়ি-বাড়ি সব হয়েছে, কিন্তু প্রতিদিন ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখার নামে সবার কাছে থ্রেট, অপমান সব সহ্য করে যাচ্ছেন। যাঁরা ব্যবসায়ী তাঁরা কি জনগণের কাছেও এভাবে মান-মর্যাদা হারায় কি? অবশ্য-ই না। তাহলে যাঁরা ব্যাংকার তাঁরা কি লেখাপড়া শিখে এখানে এসে প্রতিনিয়ত সবার কাছে-ই তিরস্কার প্রাপ্য।
ব্যবসায়ীদের উদাহরণ দিয়ে না হচ্ছি ব্যবসায়ীদের মতো আত্নসম্মানবোধে উজ্জীবিত, না পারছি শিক্ষিত ও চাকরীজীবীদের মতো স্বতন্ত্র। মাঝখান থেকে হাইব্রিড মতাদর্শ নিয়ে একই টাকা আর ব্যবসার পিছনে সবাই।