জাতীয়

মুসলমানদের ওপরে অত্যাচার হলে প্রতিবাদ করবে বিএনপি

সেকান্দর আলী আকন্দ:বিশ্বের কোথাও মুসলমানদের ওপরে অত্যাচার হলে বিএনপি প্রতিবাদের পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এ সময় ফিলিস্তিনের মতো প্রতিবেশি দেশেও মুসলিমদের প্রতি নির্যাতন হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক র‍্যালিপূর্ব প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্বাস এ কথা বলেন। ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদ এবং নির্যাতনের শিকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণ ও উত্তর শাখা যৌথভাবে এই প্রতিবাদ ও সংহতি র‌্যালি করে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ওরা ( ইসরায়েল) ফিলিস্তিন মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করছে, এক এক করে সকল মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করবে, ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। আজ যারা বিশ্বের মুসলিম মোড়ল আছে, তারা তাদের রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে নেতৃত্বে আসছে না। এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াচ্ছে না, তাদের প্রতি ধ্বংস নেমে আসবে।

তিনি আরও বলেন, সুযোগ থাকলে আমরা যুদ্ধ করে নিতাম। আমরা যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারি, একে একে সকল মুসলিম রাষ্ট্রকে তারা ধ্বংস করবে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরাও প্রতিহত করার চেষ্টা করব।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফিলিস্তিনের রাফা ও গাজায় ইসরায়েল হামলা, গণহত্যা চালালেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। এমনকি সুশীল সমাজেরও কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। বিএনপি বরাবরই মানবতার পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের প্রশ্নে মুসলিম বিশ্ব মোড়লদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ইসরায়েলকে পরোক্ষভাবে মদদ দিয়েছিল। এমনি ওই রাষ্ট্র থেকে আড়িপাতার যন্ত্র কিনে এ দেশের বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মুসলিম বিশ্বের নেতারা ও ইসলামী বিশ্বের ভূমিকা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সারা বিশ্বের মুসলমানদের আমরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে দেখি; কিন্তু ইসলামী বিশ্বের মোড়লরা কখনো সক্রিয়ভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ইসরায়েলের কারণে ফিলিস্তিনের জনগণ গণহত্যার শিকার হচ্ছে যুগের পর যুগ, দশকের পর দশক; কিন্তু তার কোনো প্রতিকার আমরা দেখছি না।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মানুষের নাম ফিলিস্তিনের জনগণ। মুসলিম বিশ্বের নিরবতার কারণে সারা পৃথিবীতে মুসলিম জনগণ গণহত্যার শিকার হচ্ছে; সেটা আরাকান থেকে ফিলিস্তিন পর্যন্ত সারা বিশ্ব বিস্তৃত।

ফিলিস্তিনি জনগণ নিজ দেশে পরবাসী হয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ ১৯৪৮ সালের পর থেকে তীব্রভাবে ইসরায়েলি হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে। তারা এখন আপন দেশে পরবাসী হয়ে গেছে। বিশ্বের কিছু পরাশক্তির সমর্থনে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর ইসরায়েল যে গণহত্যা শুরু করেছে, তা আজকে নয়- বহুদিন আগে থেকে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় র‌্যালিপূর্বক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।

এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও বক্তব্য রাখেন। কর্মসূচিতে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, আব্দুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক আমিনুল হক, মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, বর্তমান সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, হাজী মোঃ ইউসুফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড. মকবুল হোসেন সরদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহবায়ক মো.সুমন ভূইয়া, সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক শাহ আলম রাজা, সদস্য সচিব কামরুল জামান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

সমাবেশ শেষে র‍্যালি শুরু হয়। র‌্যালিটি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, মালিবাগ মোড়, মৌচাক, মগবাজার হয়ে বাংলামোটর সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাওরানবাজার মোড়ে এসে শেষ হয়। এতে ফিলিস্তিনের পতাকা, ফিলিস্তিনি শিশুদের কাফন মোড়ানো প্রতিকী মরদেহসহ নানা সজ্জায় সজ্জিত হয়ে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আহ্বান জানান।

নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে বিএনপির র‍্যালিতে ব্যাপক সমাগম:

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, সেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল, ওলামাদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্ব-স্ব ব্যানারে র‍্যালিতে যোগ দিয়েছেন। দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে র‍্যালিতে যোগ দেন।
ইসরায়েলের আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগান দেন তারা।

এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে র‍্যালিতে অংশ নেন, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার,মহানগর সদস্য আলী আকবর আলী, মোতালেব হোসেন রতন, রেজাউর রহমান ফাহিম, হাজী নাসির উদ্দিন, নুরুল হুদা ভূঁইয়া নূরু, এম এস আহমাদ আলী, হাফিজুর রহমান শুভ, ইব্রাহিম খলিল, রূপনগর থানা বিএনপি আহবায়ক জহিরুল হক, রূপনগর থানা বিএনপি নেতা মোঃ শাহ আলম মোল্লা, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ইন্জিঃ মজিবুল হক, যুগ্ম আহবায়ক আলী আহমেদ রাজু, হাবিবুর রহমান হাবিব, অলিউল হাসানাত তুহীন, সাবেক থানা যুবদলের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর কবির জন, দক্ষিণখান থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক হেলাল তালুকদার, যুগ্ম আহবায়ক আমিরুল ইসলাম বাবলু, দেওয়ান মোঃ নাজিম উদ্দীন, ডেমরা থানা বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী এস এম রেজা চৌধুরী সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুজ্জামান, মিরপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আব্দুল মতিন সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাজী দেলোয়ার হোসেন দুলু, এ্যাড মেজবাহ উদ্দিন জনি, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মোঃ আব্দুস ছালাম, উত্তরাপূর্ব থানা বিএনপি আহবায়ক শাহ আলম, যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল হক, নজরুল ইসলাম খান, থানা সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড এফ ইসলাম চন্দন, থানা বর্তমান সদস্য মহিদুল ইসলাম মহিদ, কাফরুল থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আকরামুল হক সাব্বির দেওয়ান জনি, সবুজবাগ থানা বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল রহিম, তুরাগ থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক হারুনুর রশিদ, হাজী জহিরুল ইসলাম, মোঃ চান মিয়া, থানা বিএনপি সদস্য আব্দুল আলী, শাহআলী থানা বিএনপি আহবায়ক সেলিম উদ্দিন দেওয়ান গিয়াস, খিলক্ষেত থানা বিএনপি আহবায়ক হাজী এস এম ফজলুল হক, যুগ্ম আহবায়ক মোবারক হোসেন দেওয়ান, সি এম আনোয়ার হোসেন, বাড্ডা থানা বিএনপি আহবায়ক আব্দুল কাদের বাবু, যুগ্ম আহবায়ক এমদাদুল হক এমদাদ, তেজগাঁও থানা বিএনপি আহবায়ক ইন্জি:মিরাজ উদ্দিন হায়দার আরজু, পল্লবী থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক কামাল হুসাইন খান যুগ্ম আহবায়ক মোকছেদুর রহমান আবির, বিমানবন্দর থানা বিএনপির আহবায়ক মনির হোসেন ভূইয়া, যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি আহবায়ক শুক্কুর মাহমুদ, যুগ্ম আহবায়ক মীর মোঃ কামাল হোসেন, আদাবর থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সাদেক হোসেন স্বাধীন, মতিঝিল থানা বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান মাহমুদ, রামপুরা থানা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল করিম বড় মিয়া, মিরপুর থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আবুল বাশার ভূইয়া, যুগ্ম আহবায়ক স ম আরিফ উল্লাহ, মাসুদ আকতার পলাশ, মোঃপুর থানা ৩৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি এডভোকেট মাসুম খান রাজেশ সাধারণ সম্পাদক ওসমান রেজা, আদাবর থানা ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, রূপনগর থানা বিএনপি ৭ নং ওয়ার্ড সভাপতি শফিকুল ইসলাম মামুন, ভাটারা ৪০ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম হাতি, ৩৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি সিনিয়র সভাপতি ওসমান গনি সেন্টুসহ ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও রাজধানীর বাহিরে সারাদেশের সকল মহানগর শহরে প্রতিবাদ জানিয়ে সংহতি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button