অর্থ-বাণিজ্য

ক্রেতাদের আস্থায় দেশ সেরা ব্র্যান্ড হয়ে উঠছে লিলি

সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণায় ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে ব্র্যান্ডটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের অন্যতম সেরা ব্র্যান্ড হয়ে উঠছে ‘লিলি’। স্কিন কেয়ার, কালার কসমেটিকস ও পার্সোনাল কেয়ার পণ্যের সমাহার নিয়ে এরই মধ্যে বাজারে শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে এই ব্র্যান্ড। ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন কনসালটেন্সি এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের উঠতি ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে রিমার্কের ব্র্যান্ড ‘লিলি’। রিমার্ক এলএলসি ইউএসএ’র অ্যাফেলিয়েটেড ব্র্যান্ড লিলি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে সর্বোৎকৃষ্ট পণ্য উৎপাদনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই মধ্যে ব্র্যান্ডটির সঙ্গে জড়িয়েছেন দেশ সেরা মডেল, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। রিমার্ক-হারল্যানের পরিচালক বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খানের হাত ধরে এই ব্র্যান্ড এরই মধ্যে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ব্র্যান্ড সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশেই নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে বিশ্বমানের কালার কসমেটিকস ও প্রসাধন সামগ্রী উৎপাদন করছে লিলি। শুধুমাত্র কসমেটিকস খাতে ব্র্যান্ডটির পণ্য রয়েছে ১১০ ধরনের। পাশাপাশি স্কিন কেয়ার পণ্যের মধ্যে ক্রিম, পেট্রোলিয়াম জেলি ও লোশনসহ ১৭ পণ্য রয়েছে। পার্সোনাল কেয়ার ইউনিটে ফেসওয়াশ, বডি ওয়াশ, বিউটি সোপ, শ্যাম্পুসহ রয়েছে ১৫টি পণ্য। এছাড়া ব্র্যান্ডটি আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতে বিদেশী ও দেশী গবেষকদের সমন্বয়ে পরিচালিত অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে প্রতিনিয়ত গবেষণা পরিচালনা করছে। যা পণ্যের মান নিশ্চিতসহ ভোক্তাদের চাহিদা মেটাচ্ছে।

এশিয়ার অন্যতম খ্যাতনামা কসমেটোলজিস্ট ড. সাকুন মাংগুত বলেন, কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার পণ্য যেহেতু মানুষের ত্বক ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং এর প্রতিক্রিয়া মানুষের দেহে সরাসরি দেখা যায়। এজন্য এসব পণ্য গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বাজারজাত করা ঠিক না। এসব পণ্য দেশের পরিবেশ, আবহাওয়া ও মানুষের ত্বকের ধরণ নিয়ে কোন গবেষণা করে ফর্মুলেশন করে তৈরী করতে হয়। অতীতে বাংলাদেশে এই চর্চা ছিলো না। একাধিক ব্র্যান্ড থাকলেও সে ব্র্যান্ডগুলো মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। লিলি সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, তারা প্রতিটি পণ্য উৎপাদনের আগেই গবেষণায় জোর দিয়েছে এ খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। পাশাপাশি দেশের মানুষের ত্বক ও আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে পণ্যগুলোর বিশ্বমান নিশ্চিত করেছে। আমি মনে করি শিগগিরই লিলি ব্র্যান্ডের পরিধি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে এশিয়া তথা বিশ্বে শক্ত অবস্থান তৈরী করতে সক্ষম হবে।

ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশনের সঙ্গে জড়িত সংগঠন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভোক্তাদের জীবনে ব্র্যান্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি ব্র্যান্ডের উন্নতি তার ব্যবসার পাশাপাশি দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্বও বাড়িয়ে দেয়। আমরা সেসব ব্র্যান্ডকে স্বীকৃতি জানাই, যারা কেবল তাদের ব্যবসায় নয় বরং সমগ্র জাতি এবং অর্থনীতির বৃদ্ধিতেও ব্যাপক অবদান রেখেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই স্বীকৃতি বাংলাদেশে সক্রিয় সব ব্র্যান্ডকে আরও ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে। সেখানে লিলি উদীয়মান ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম অবস্থানে। আশা করি তারা বিশ্ববাজারে আমাদের অবস্থানকে আরো সমৃদ্ধ করবে।’

রিমার্ক-হারল্যানের পরিচালক চিত্র নায়ক শাকিব খান বলেন, খুব অল্প সময়েই আমরা বাজারে এসেছি। তারপরও ভোক্তারা আমাদের পণ্যের মান ও ফ্লেভারকে নিজের মনে করে নিয়েছে। আমরা মনে করি লিলি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে খুব শিগগিরই শীর্ষ স্থানে চলে আসবে। আমরা শুধু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিপণন করতে চাই না। আমরা দেশ, দেশের মানুষ এবং দেশের সার্বিক উন্নতির দিকে লক্ষ্য রেখে বিপণন ব্যবস্থাকে সাজিয়েছি। এতে করে ব্র্যান্ড ইমেজ যেমন তৈরি হবে, তেমনি দেশেরও উন্নয়ন হবে।

এরই মধ্যে শাকিব খান ও মার্কিন মডেল কেলসি অভিনীত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধারণ করা লিলি বিউটি সোপের বিজ্ঞাপনচিত্র বেশ সাড়া জাগিয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি লিলি সিলকোর শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনও সম্প্রচারে এসেছে। সম্প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি পণ্যের বিজ্ঞাপন। লিলি ব্র্যান্ড সিইও হাসান ফারুক জানান, আমরা সবকটি পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের কাজ শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে এগুলো দেখা যাবে। তবে টেলিভিশন ছাড়াও দৈনিক পত্রিকা, ডিজিটাল মাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিলবোর্ড, সাইনপোস্ট, শপসাইনসহ প্রচার মাধ্যমে লিলি ব্র্যান্ডের উপস্থিতি দৃশ্যমান হয়েছে। এর বাইরে ইনফ্লুয়েন্সার ও খাত সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমেও সময়োপযোগী ব্র্যান্ডিং প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

গ্লোবাল সফ্ট পাওয়ার ইনডেক্স ২০২৩-এ, বাংলাদেশ ৯৭ তম স্থানে রয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি ব্র্যান্ড মূল্য পরিবর্তনে ৩৭ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি রেকর্ড করে, র‌্যাংঙ্কিংয়ে দ্রুততম বর্ধনশীল দেশগুলির একটি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। গ্লোবাল সফট পাওয়ার ইনডেক্স ২০২৩ অনুযায়ী ২০২২ সালে ২৯ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের সূচকের স্কোর ছিল ৩৫.১। এতে করে দেশের ব্র্যান্ডের মূল্য দাঁড়ায় $৩৭১ বিলিয়ন ডলার।

ভারত ২,৯২৪ বিলিয়ন ডলারের ব্র্যান্ড মূল্যের সাথে সূচকে ২৮ তম স্থানে এক ধাপ এগিয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ব্র্যান্ড ভ্যালুর দিক থেকে, ভারতের পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যেখানে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের ব্র্যান্ড ভ্যালু যথাক্রমে ২৩২ বিলিয়ন, ৪৮ বিলিয়ন এবং ২৯ বিলিয়ন ডলার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button