জাতীয়

গ্রামীন টেলিকমের মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের কারাদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক : শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ আসামিদের ১ মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকেল তিনটার দিকে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন গ্রামীণ টেলিকমের এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। তাদেরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এক নম্বর আসামির বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলা হয়েছে। কিন্তু এ আদালতে নোবেলজয়ী ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচার হচ্ছে। এসময় আদালত বলেন, ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

এদিকে ইউনূসের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শ্রম আদালত ও এর আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। খবর সংগ্রহের জন্য রায় ঘোষণার এক ঘণ্টা আগে দেশের ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সেখানে ভিড় জমান।

রায় শুনতে আদালতে উপস্থিত হন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, তার স্ত্রী একটিভিস্ট রেহনুমা আহমেদ, রাজনীতি-বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন মামলায় রায় ঘোষণার জন্য ১ জানুয়ারি (আজ) দিন ধার্য করা হয়।

এর আগে ২১ ডিসেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে মামলার আইনগত বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। ওইদিন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছিলেন, এ মামলার সাক্ষীদের বর্ণনায় ড. ইউনূসসহ অন্যরা সংশ্লিষ্ট আছেন এমন কোনো বর্ণনা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ডকুমেন্ট নেই। মামলার আর্জিতে কোথাও আসামিরা অপরাধী এমন কোনো অভিযোগ নেই।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগ আনা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button