চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই ঘাতক গ্রেপ্তার

জেলা প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আতাহার এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতে চালক পলাশ হালদারকে হত্যা করে লাশ সরিষাক্ষেতে ফেলে রাখেন হত্যাকারীরা। পরে অটোরিকশাটি ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছে ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় তারা।
সোমবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানতে পেরেছেন তারা। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অটোরিকশাচালক পলাশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত ৪ আসামিকে। তবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল রকি (৩২) ও মো. জনি (২৪)। পরে দুই ক্রেতার কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাটিও খণ্ডিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ জন্য তাদেরও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকার একটি সরিষাক্ষেতে পলাশের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পলাশের গলায় মাফলার প্যাঁচানো ছিল। পলাশ হালদার সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের কালীনগরের শ্রী লাকফর হালদারের ছেলে।
পলাশ হালদার হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলো রাজশাহীর তানোর থানার কলমা গ্রামের একরামুল হকের ছেলে রকি ও রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার কাজলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে জনি।
তাদের তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় অটোরিকশার ক্রেতা তানোর থানার তালন্দ বাজারের মৃত ফয়জুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মো. জুয়েল (৪০) ও নওগাঁর মান্দা থানার চৌবাড়ীয়া পশ্চিমপাড়ার আ. রশিদের ছেলে সানোয়ার হোসেনকে (২৪)।
পলাশের স্বজনরা জানান, ১২ ফেব্রুয়ারি নিজের অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন পলাশ। ওই দিন থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি তার বাবা লাকফর হালদার থানায় জিডি করেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরিষাক্ষেতে তার লাশ পান স্থানীয়রা।
পুলিশ জানায়, অটোরিকশা ছিনতাই করার জন্যই পলাশকে তারা হত্যা করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পলাশের অটোরিকশা ভাড়া করে খুনিরা। আসামিরা পলাশের পরিচিত ছিল। প্রথমে পলাশকে বাংলা মদ খাইয়ে মাতাল করে তারা। পরে শ্বাসরোধে হত্যা করে সরিষাক্ষেতে লাশ ফেলে অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়। পরে দুটি ভাঙারির দোকানে ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
পুলিশ সুপার বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে উপস্থাপন করা হবে।