মুক্তমন রিপোর্ট : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ১ আসন মিরসরাইয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াসউদ্দিন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই আসনে বেসরকারি ফলাফলে জয়লাভ করেন নৌকা প্রতীকের মাহবুব উর রহমান রুহেল। ৮ জানুয়ারি দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম ১ আসনের ফলাফল বাতিল ও নির্যাতন বন্ধের জন্য আহ্বান জানান গিয়াসউদ্দিন।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গিয়াসউদ্দিন নির্বাচনে ঘটে যাওয়া সকল অনিয়ম ও তার কর্মী-সমর্থকদের উপর হওয়া হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই গিয়াসউদ্দিনের সমর্থক এবং সাধারণ ভোটারদের উপর হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেয়া শুরু হয়। নির্বাচনের আগের দিন রাত থেকে নির্বাচনী কেন্দ্রে অনিয়ম, কেন্দ্র দখল, কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটানো, এজেন্টদের অবরুদ্ধ করে রাখা, জাল ভোট প্রদান, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলার অভিযোগ তোলেন। নির্বাচনের দিন নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৭৩টি কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম. গিয়াস উদ্দিন। এ ব্যাপারে তিনি ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনকে বারবার বললেও তারা কোন ধরনের পদক্ষেপ নেননি।
তিনি বলেন, “আমার ২৭ জন এজেন্টকে মারপিট করা হয়েছে। অধিকাংশ কেন্দ্রের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটার ও কর্মীদের হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। ৭৩টি কেন্দ্র দখল করে নেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “ওরা তাদের ১০ শতাংশ ভোট পড়বে নিশ্চিত হয়ে কেন্দ্র দখলে বেপরোয়া হয়ে গেছে। ”
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই তারা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। তো সেই নির্বাচন নিয়ে বেশিদূর যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার ছিলো না। আমি ভোট বর্জন করতাম। কিন্তু আমি আমার ভোটারদের কথা চিন্তা করে আমার ধৈর্য শক্তিকে বিসর্জন দিয়ে নির্বাচনের শেষ অব্দি ছিলাম। আমি প্রশাসনের উদাসীনতা দেখে খুবই হতাশ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ধরনের নির্বাচন চাননি। চর দখলের মতো ভোট দখল করে এমপি নির্বাচিত হয়ে জনগণের জন্য তিনি কিছু করতে পারবেন না।
মাননীয় নির্বাচন কমিশনারের প্রতি আমার আকুল আবেদন, এই নির্বাচন আপনি বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দিন। গিয়াস উদ্দিন জোর গলায় দাবি করেন প্রকাশিত ফলাফলে মিরসরাইবাসীর ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠা পায়নি, তাদের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি, মিরসরাইবাসীর সাথে অন্যায় করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গিয়াস উদ্দিনের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মুর্শিদ এলিট। আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা, নির্বাচনী উপদেষ্টা নুরুল আলমসহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী নিয়াজ মোরশেদ এলিট বলেন, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন, ভোটার বিহীন নির্বাচন, অসম্মান আঘাতের নির্বাচন, আর সম্মানিত ভোটারদের বেইজ্জত করা, ভোট দিতে বাধা দেওয়ার এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন যেন দেয়া হয়। তাহলে মিরসরাইয়ের জনগণের কাছে শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি অনেক বেড়ে যাবে