গাজা থেকে ২ হাজার ৫০০ শিশুকে সরিয়ে নিতে জাতিসংঘের আহ্বান
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা থেকে ২ হাজার ৫০০ শিশুকে চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বাইরে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার আমেরিকায় একদল চিকিৎসকের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠকে চিকিৎসক দলটি জানিয়েছে, এই শিশুরা আগামী সপ্তাহগুলোতে অত্যাসন্ন মৃত্যুঝুঁকিতে পড়বে।
দলটির চার সদস্য গাজায় ১৫ মাস ধরে যুদ্ধ চলাকালে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোর মধ্যে চলা এ যুদ্ধে পুরো গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধে ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং ভেঙে পড়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে গুতেরেস বলেন, ‘চিকিৎসক দলের সঙ্গে বৈঠকটি তাকে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে। এ নিশ্চয়তা দিয়ে গাজা থেকে অবশ্যই আড়াই হাজার শিশুকে অবিলম্বে সরিয়ে নিতে হবে যে তারা তাদের পরিবার ও কমিউনিটির কাছে আবারও ফিরতে পারবে।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর মাত্র কয়েক দিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও বলেছে, চিকিৎসার জন্য উপত্যকাটি থেকে ১২ হাজারের বেশি রোগী বাইরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা না হলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
এদিকে শুক্রবার ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ১৫ মাসের আগ্রাসনে সংগঠনটির রাজনৈতিক শাখার ১৬ শীর্ষনেতা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া ও তার উত্তরসূরি ইয়াহইয়া সিনওয়ার এবং উপপ্রধান সালেহ আল-আরুরি রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আলকাসসামের পক্ষ থেকে এর প্রধান মোহাম্মদ দেইফের নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এক ভিডিও বার্তায় আলকাসসামের মুখপাত্র আবু উবাইদা জানান, গাজায় ইসরাইলের সঙ্গে ১৫ মাসের চলমান লড়াইয়ে তিনি শহীদ হয়েছেন।
আবু উবাইদার বার্তায় একই সঙ্গে আলকাসসামের উপপ্রধান মারওয়ান ঈসাসহ আর ছয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নিহতের তথ্য নিশ্চিত করা হয়। গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শনিবার মুক্তি পাচ্ছেন তিন ইসরাইলি জিম্মি। এর বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে ৯০ ফিলিস্তিনিকে।
শুক্রবার আলজাজিরার প্রকাশিত খবরে এই তথ্য জানানো হয়। খবরে বলা হয়, শনিবার তিন ইসরাইলি পুরুষ জিম্মিকে মুক্তি দেবে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মুক্তি পেতে যাওয়া জিম্মিরা হচ্ছেন ৫৪ বছর বয়সি ফরাসি-ইসরাইলি নাগরিক ওফের কালদেরন, ৬৫ বছর বয়সি আমেরিকান-ইসরাইলি নাগরিক কেইথ সেইগেল ও ৩৫ বছর বয়সি ইসরাইলি-আর্জেন্টাইন নাগরিক ইয়াদেন বিবাস। মুক্তি পেতে যাওয়া সবাই বেসামরিক নাগরিক।
এর বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৯ ফিলিস্তিনি বন্দিসহ ৯০ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার গাজা থেকে দুই ইসরাইলি নারী ও এক পুরুষ মুক্তি পান। এ ছাড়া ইসরাইলে কাজ করতে আসা পাঁচ থাই জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। দুই নারীর একজন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফের সদস্য। এর বিপরীতে ১১০ ফিলিস্তিনিকে ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।