পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার : ভারত-কানাডা সম্পর্কে উত্তেজনা
মুক্তমন ডেস্ক : খালিস্তানপন্থী ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফের গরম হয়ে উঠেছে ভারত-কানাডার সম্পর্ক। গত বছর খুন হওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী ওই শিখ নেতার হত্যার সঙ্গে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে কানাডার তদন্তকারী পুলিশ। এর পরপর কানাডিয়ান কূটনীতিকদের শনিবারের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারত। এর জবাবে কানাডাও ভারতীয় ছয় কূটনীতিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এতে দুই দেশের টান টান সম্পর্কে বড় ধরণের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
এতে বলা হয়, ভারত সরকার কানাডিয়ান যেসকল কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে তারা হলেন, ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার স্টুয়ার্ট রস হুইলার, ডেপুটি হাইকমিশনার প্যাট্রিক হেবার্ট, ডেপুটি হাইকমিশনার মিসেস ম্যারি, প্রথম সচিব ক্যাথরিন জোলি, ফার্স্ট সেক্রেটারি ল্যান রস ডেভিড ট্রিটস এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি মিস এডাম জেমস চুইপকা। ১৯ অক্টোবরের আগেই তাদের ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার এবং অন্যান্য কূটনীতিক এবং কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করা ভিত্তিহীন এবং অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছে ভারত। নিজস্ব কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে দিল্লি বলেছে, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান কানাডিয়ান সরকারের প্রতিশ্রুতিতে ভারতের কোনো আস্থা নেই।
শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার তদন্তে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে খারিজ করেছে দিল্লি। এতে দুই দেশের মধ্যে আবারও উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে।
ভারতীয় নাগরিক নিজ্জার ১৯৯৭ সালে অভিবাসী হিসেবে কানাডায় পাড়ি জমান। পরে ২০১৫ সালে কানাডার নাগরিকত্ব পান তিনি। ভারতের বহুল আলোচিত পৃথক স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন করে আসা খালিস্তানপন্থীদের অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। সন্ত্রাসবাদ এবং হত্যার ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার দায়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেছিল।
গত বছরের জুনে কানাডার ভ্যানকুভারে একটি শিখ মন্দিরের পাশের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন নিজ্জার। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে কানাডায় ইতোমধ্যে চার ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে বলে তদন্তের পর দাবি করেছে কানাডার আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এমনকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ নিয়ে প্রকাশ্যে ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন। এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।