ফাইনালে বরিশালের প্রতিপক্ষ খুলনা নাকি চিটাগং

স্পোর্টস রিপোর্টারঃ মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ মিঠুন
নামের ভারের রংপুর রাইডার্সের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে ছিল খুলনা টাইগার্স। তবে মাঠের খেলায় নাসুম আহমেদ-মেহেদী হাসান মিরাজদের পারফরম্যান্সে মনেই হয়নি খাতা-কলমে এতটা পেছানো দলটি। তারকাসমৃদ্ধ হয়েও এলিমিনেটরে খুলনার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে রংপুর রাইডার্স। তাতে খানিকটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাঠে নামবে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন খুলনা। অন্যদিকে ফরচুন বরিশালের কাছে হেরে খানিকটা পিছিয়ে থেকে চিটাগং কিংসকে মাঠে নামতে হবে। কারণ, বরিশালের বিপক্ষে সামান্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি দলটি। তবু অবশ্য দল হিসেবে সেরাটা দিতে পারবেন এমন আশায় আছেন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন।
রংপুরকে হারিয়ে সংবাদ সম্মেলনে নাসুম আহমেদ জানান, জিততে পারবেন এমন আশা নিয়েই পুরো টুর্নামেন্ট খেলছেন। ফলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনাল খেলা কঠিন হবে না। অন্যদিকে প্রথম কোয়ালিফায়ারের পর চিটাগং কিংস অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন জানান, ফাইনালে খেলতে দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটারদের। এই জায়গাতে খুলনার চেয়ে খানিকটা পিছিয়ে আছে চিটাগং কিংস। টুর্নামেন্টজুড়ে একাদশে কম ব্যাটার নিয়ে সাফল্য পেয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। তবে ব্যাটিংয়ের আশার জায়গায় দুই তরুণ পারভেজ হোসেন ইমন ও শামীম পাটোয়ারি আছেন দারুণ ছন্দে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে চিটাগং কিংসের স্কোর বড় হয়েছে মূলত শামীমের ৪৭ বলে ৭৯ রানের ঝড়ে। দলের প্রয়োজনে যে কোনো মুহূর্তে জ্বলে উঠতে পারেন খানিকটা নির্ভার অধিনায়ক মিঠুন।
এ ছাড়া বোলিং আক্রমণে শরিফুল ইসলাম-খালেদ আহমেদের সঙ্গে নিয়মিত পারফর্ম করছেন আলিস আল ইসলাম ও ঘরোয়া ক্রিকেটের পরীক্ষিত মুখ আরাফাত সানি। যদিও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের আগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সানির বোলিং অ্যাকশন। বিপিএল ফাইনালের আগে পরীক্ষা দেবেন না তিনি। ফলে তার জন্য এ ম্যাচে খেলতে কোনো বাধা নেই। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নিজেদের বোলিং আক্রমণ দিয়েই যে খুলনাকে হারাতে চাইবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। বন্দরনগরীর দলটির দেশিরা যেমন ফর্মে আছেন ঠিক তেমনই দলের প্রয়োজনে জ্বলে ওঠেন বিদেশিরাও। বিশেষ করে খাজা নাফে ও গ্রাহাম ক্লার্ক এবারের বিপিএলে নজর কেড়েছেন দারুণভাবে। তাতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনালে যাওয়ার আশা রাখতেই পারে দলটির সমর্থকরা।
অন্যদিকে দেশিদের পারফরম্যান্সই মূল ভরসা খুলনা টাইগার্সের। দলটির ওপেনার নাঈম শেখ এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। সঙ্গে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ আছেন দারুণ ছন্দে। ব্যাট-বলে দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠেছেন তিনি। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারেও তাই অধিনায়কের কাছ থেকে ভালো কোনো পারফরম্যান্স চাওয়া থাকবে দলটির সমর্থকদের। পাশাপাশি প্লে অফের আগ মুহূর্তে জেসন হোল্ডার ও শিমরন হেটমায়ারকে দলে ভিড়িয়েছে। তাদের কাছেও থাকবে বড় প্রত্যাশা। সবশেষ ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে একাদশে থাকলেও হোল্ডার-হেটমায়ারদের পারফর্ম করার সুযোগই দেননি দেশি ক্রিকেটাররা। নাঈম-মিরাজের মতো লোয়ার অর্ডারে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও ঝড় তুলতে পারেন উইকেটে। বল হাতে নাসুম, হাসান মাহমুদ ও মুশফিক হাসানও দারুণ পারফর্ম করছেন। ফলে তাদের প্রতি প্রত্যাশাটাও থাকবে আকাশচুম্বী।
দুই দলের এমন দারুণ লাইন আপ দিচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই উপহার দেওয়ার আগে দুই দলের ক্রিকেটারদের জয় করতে হবে নিজেদের স্নায়ু। স্নায়ুর লড়াইয়ে হারলে আগেই মাঠের লড়াইয়ে বিষাদের সঙ্গী হতে হবে। তেমনটা চিন্তা করেই মাঠে নামলে দুই দলই উপহার দিতে পারবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সেই লড়াই জিতে কে ফাইনালে ওঠে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।