বরিশাল না চিটাগংয়ের, ফয়সালা আজ রাতে

স্পোর্টস রিপোর্টারঃ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে শেষ বলে হওয়া বাউন্ডারিতে ফাইনাল নিশ্চিত করে চিটাগং কিংস। প্রথম কোয়ালিফায়ারে তাদের হারিয়েই প্রথম দল হিসেবে ফরচুন বরিশাল নিশ্চিত করে ফাইনাল। ম্যাচটিকে চিটাগং কিংসের জন্য প্রতিশোধের ম্যাচ হিসেবেই গণ্য করা যায়। তবে এতসব কঠিন চিন্তা নেই চিটাগং কিংসের মাথায়। তাদের সহজ চিন্তা হলো ভালো ক্রিকেট খেলে শিরোপা ঘরে তোলা। ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালের কণ্ঠেও ছিল একই সুর। বাড়তি কোনো কিছুর চেষ্টা না করে ট্রফি নিজেদের কাছে রেখে দেওয়ার লক্ষ্যে মাঠে নামতে চান তিনি। ফাইনালে দুদলের শিরোপা জয়ের লড়াই শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৬টায়। ফাইনালের এই লড়াইয়ের আগে দারুণ এক পরিসংখ্যানে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
১১ বছর পর বিপিএলে ফিরেই ফাইনাল খেলবে চিটাগং কিংস। সবশেষ অংশ নেওয়া ২০১৩ সালেও দলটি ছিল ফাইনালে। অন্যদিকে শেষ চার বছরে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে খেলতে নামছে ফরচুন বরিশাল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশে স্থাপিত বুথে দর্শকের ভিড় দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ফাইনাল নিয়ে উন্মাদনা অনেকটাই বেশি। সেখানে ক্ষণে ক্ষণে শোনা যাচ্ছিল, ‘বরিশাল বরিশাল’ স্লোগান। বিপিএলে বরিশালের অন্য ম্যাচগুলোর দিনে দলটির সমর্থকে ভরপুর ছিল গ্যালারি। সব মিলিয়ে খানিকটা ধারণা করা যায় আজ মিরপুরে গ্যালারি হয়ে উঠতে পারে বরিশালময়। মাঠ ও মাঠের বাইরে থাকা এই দর্শকদের কোনোভাবে হতাশায় ডোবাতে চান না বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এমনকি লঞ্চে করে ট্রফি বরিশালে যাবে- এমন চাওয়াও দলটির সমর্থকের। চ্যাম্পিয়ন হলে সেই চাওয়াটা পূরণ করতে চান তিনি।
সমর্থকদের এই চাওয়া পূরণ করতে মাঠে দিতে হবে সেরাটা। তবে এর জন্য বাড়তি কোনো চাপ নিচ্ছেন না তামিম ইকবাল। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দল এখন অনেক রিল্যাক্স আছে। যদি আমরা প্ল্যান কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমাদের পক্ষে আসবে সবকিছু।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ফাইনালে আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। ১৩-১৪ ম্যাচে যা করেছি, সব সেভাবেই করতে হবে। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে সেরাটা দেওয়ার। ফাইনালকে শুধু একটি ম্যাচ হিসেবেই দেখতে হবে।’
ফাইনালে বাড়তি চাপ না নেওয়ার কথা বললেও এই ম্যাচ উপলক্ষে নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার জিমি নিশামকে শেষ মুহূর্তে দলে নেয় ফরচুন বরিশাল। ফাইনালের জন্য উড়িয়ে আনা এই বিদেশিকে খেলানো হবে আজ। তার সঙ্গে বিদেশি কোটায় দলটির একাদশে থাকবেন মোহাম্মদ আলী, দাভিদ মালান ও মোহাম্মদ নবী। সঙ্গে দেশের ক্রিকেটের তিন বড় নাম মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক ও তামিম তো থাকবেনই একাদশে। ফলে চিটাগংকে ফাইনাল জিততে হলে পড়তে হবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। কারণ, দলটিতে দেশি কিংবা বিদেশি কোনো জায়গায়ই নেই বড় কোনো নাম। মোহাম্মদ মিঠুনের নেতৃত্বাধীন চিটাগংয়ে শরিফুল ইসলাম-খালেদ আহমেদ ছাড়া নেই বড় কোনো তারকা ক্রিকেটার। বড় তারকা না থাকলেও দলীয় পারফরম্যান্সে ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে দলটি। পারভেজ হোসেন ইমন, শামীম পাটোয়ারীর পাশাপাশি হুসেইন তালাত, খাজা নাফেরা করেছেন কার্যকরী পারফরম্যান্স। টুর্নামেন্টজুড়ে কম তারকায় ঠাসা ক্রিকেটাররা দলকে সামনে টেনে নেওয়ায় ফাইনালের আগে বড় কোনো নাম যোগ হয়নি চিটাগংয়ের ডেরায়। দলটির মালিক সামির কাদের চৌধুরী জানান, স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের ওপরই ভরসা রাখছেন তারা।
তারকায় ঠাসা বরিশালের বিপক্ষে চিটাগংয়ের লড়াইয়ে ছিল না প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো ঝাঁজ। একপেশে লড়াইয়ে জয় নিশ্চিত বরিশালের। এবার তেমন কিছু না হোক- সেটাই দর্শকের চাওয়া থাকবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই শেষে কার হাতে শিরোপা ওঠে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।