মুক্তমন রিপোর্ট : চাঁদপুর-২ নির্বাচনী আসনে (মতলব) সাবেক ত্রান মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার প্রভাবে এই আসনে নির্বাচন জমেনি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেখা যায় বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১০-১২ শতাংশ। অধিকাংশ কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ছিল নগন্য। গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত হলেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা ডামি লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তারা চলে যাওয়ার পর ফের ফাঁকা দেখা গেছে কেন্দ্র।
সকাল ১০টায় এই আসনের মতলব উত্তর চর বাঁচুয়ার হাজী মইনুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ৩১৭৭ ভোটারের এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ১১৭টি। পরবর্তীতে কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে পুনরায় মাত্র ১ ঘন্টার ব্যবধানে কেন্দ্রে গিয়ে জানা যায় ৫৪ শতাংশ ভোট গ্রহণ হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুর রহিম কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি স্বীকার করেন যে কেন্দ্রে শুধু নৌকা মার্কার এজেন্টরাই রয়েছে।
এ আসনে ঈগল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার অনুসারীরা তাকে এজেন্ট নিয়োগ বাধা দিয়েছে। তাছাড়া তাঁর সমর্থকদের হুমকী দেয়ায় ভয়ে ভোটাররা ভোট দিতে আসেনি। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রশাসনের সহায়তায় ভোটার নয়, কিশোর এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের দিয়ে ভোট কাস্ট করানো হয়েছে।
চাঁদপুর-২ আসনে কলাকান্দা, গজরা, মোহনপুর, ফতেহপুর পূর্ব ও পশ্চিম,বড় হলদিয়া ছোট হলদিয়া, রামদাসপুর, ফরাজিকান্দির ভোট কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিতি ছিলো হাতে গোন। তবে এসব কেন্দ্রের ভেতর ও আশপাশে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের গলায় ব্যাজ ঝুলিয়ে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।
কেন্দ্রের বাইরে বেশ কয়েকজন স্থানীয় ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত নৌকার প্রার্থী মায়ার প্রভাবে কোনঠাসা হয়ে ছিলো অন্য প্রার্থীরা। ভয়ে কেন্দ্রে আসেনি ভোটাররা। পর্যবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা একাধিক গণমাধ্যম কর্মীরা বলেছেন, বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট কাস্টিং দেখাতে জাল ভোট দেয়া হয়েছে। বড় চর কালিয়া, নাওভাঙা জয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সাংবাদিকরা প্রবেশ করার খবর পেয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ সময় কেন্দ্রগুলো জনমানবশুন্য দেখা গেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের এজেন্টের অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার দীপক চন্দ্র দত্ত জানান তারা কেন্দ্রে আসেননি। ইতিপূর্বে দের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেওয়ার এবং হামলার অভিযোগ করেছিলেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান। গত বুধবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মতলব উত্তরের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর ২ , মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী নৌকা, মো. এমরান হোসেন মিয়া লাঙ্গল, মো. মনির হোসেন একতারা, ও মো হাছান আলী সিকদার মশাল প্রতীক নিয়ে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।