রাজনীতি

পিলখানা হত্যাকান্ড ছিল পরাজিত শত্রুর ষড়যন্ত্র : গোলাম মোস্তফা

‘২০০৯ সালে ২৫ ফেব্রæয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের নামে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হয়েছিল পিলখানায়। বাংলাদেশের ইতিহাসের কালোদিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে ২৫ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ পিলখানা বিডিয়ার বিদ্রোহের হত্যাকান্ড ছিল’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

তিনি বলেন, ‘সেদিন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করতেই ষড়যন্ত্রকারীরা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল করতেই সা¤্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তি ফ্যাসীবাদী সরকারের মাধ্যমে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। জাতি হিসাবে আমাদের দুর্ভাগ্য, দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশী সময়েও বাংলাদেশ ঘর সামলাতে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে নাই। পারে নাই শক্ত মাটিতে পা রেখে চলতে। কে বাংলাদেশের বন্ধু এবং কে শত্রু তাও সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে নাই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে রাষ্ট্রের জন্ম মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রান্তরে, সেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বার বার শুকুনির কালো থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে।’

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২৫ ফেব্রæয়ারি বিডিআর ট্রাজিডি স্মরণে ”বিডিআর ট্রাজেডির প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে” ‘আগ্রাসন প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক আন্দোলন’ কমিটি আয়োজিত সমাবেশে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর আধিপত্যবাদী শক্তির দখলদারিত্ব কায়েমের লক্ষ্যে ফ্যাসীবাদী শাসককে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশই ছিল বিডিআর বিদ্রোহের নাটক সাজিয়ে পিলখানায় নির্মম হত্যাকান্ড। এটি কোনো বিদ্রোহ ছিল না, ছিল পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, যা দিবালোকের মত স্পষ্ট। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে দেশকে চোরাবালির সন্ধিক্ষণে দাঁড় করানো হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের কবর রচনা করে নৈরাজ্যবাদের জন্ম ি দিয়েছিল পতিত ফ্যাসীবাদী আওয়ামী সরকার। পিলখানা হত্যাকান্ডে আমরা জাতির সূর্য সন্তানদের হারিয়েছি। তাদের হারানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ভিতকে আঘাত করা হয়েছি। হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ডদের অনেকেই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। সরকার পতনের পর অনকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের দ্রæততম সময়ে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা জুলাই অভ্যুত্থানে প্রতিষ্ঠিত সরকারের জরুরী করনীয়।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর চরম আঘাত আনার লক্ষ্যেই এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছির। কোনো দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নয়। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী যাতে দুর্বল হয়ে যায়, বিডিআর নামে যাতে শক্তিশালী কোনো বাহিনী না থাকে- তার জন্যই এই হত্যাকান্ড। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকান্ড বন্ধ করার সুযোগ থাকলেও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এটাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার লোক দেখানো চেষ্টা করা হয়েছিল। দরবার হলের কাছে র‌্যাবের একটি পেট্রোল টিম থাকলেও বিদ্রোহ দমনে তাদের পিলখানায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নাই।

তিনি বলেন, আমরা সেই সব সন্তানদের প্রতি লজ্জিত এবং দুঃখিত, যারা পিলখানার নারকীয় হত্যাকান্ডে তাদের পিতামাতা হারিয়েছেন, যারা স্বামী হারিয়েছেন। স্বজনহারা এসব পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেবার কোন ভাষাই আমাদের নেই। যেদিন এই হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে এবং প্রকৃত অপরাধিদের সঠিক বিচার হবে, সেদিন হয়তো স্বজনহারারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।

আগ্রাসন প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক আন্দোলনের আহ্বায়ক ও ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আমীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্যে রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মুভমেন্ট ফর প্যালেস্টাইন বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর হারন অর রশিদ খান, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, বাংলাদেশের নাগরিক পরিষদের সভাপতি আবদুল আহাদ নুর, লেবার পার্টির ঢাকা মহানগর সভাপতি হুমায়ুন কবির, আগ্রাসন প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক আন্দোলন সদস্য সচিব মাওলানা মোহাম্মদ ইলিয়াস আতাহারি প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button